অন্নদানগর-দেবী চৌধুরাণী: যাত্রী ওঠানামা করলেও স্টেশনে ঝুলছে তালা

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর ও দেবী চৌধুরাণী স্টেশনে বুকিং ক্লার্কসহ দীর্ঘদিন ধরে কোনো জনবল নেই। ফলে প্রতিদিন ছয়টি ট্রেন চলাচল করলেও স্টেশন দুটি থেকে যাত্রীরা বিনা টিকিটে যাতায়াত করছে। পাশাপাশি জনবল না থাকায় পুরো স্টেশন এলাকা যেন পরিণত হয়েছে গো-চারণ ভূমিতে।

জানা গেছে, জনবল সংকটের কারণে প্রায় ১০ বছর আগে স্টেশন দুটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ওই পথে ১৪টি ট্রেন যাতায়াত করছে। এর মধ্যে ছয়টি ট্রেন নিয়মিত থামে স্টেশন দুটিতে। স্টেশন দুটি থেকে গড়ে প্রতিদিন দুই শতাধিক যাত্রী ওঠা-নামা করে।

সরেজমিন দেখা যায়, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত দেবী চৌধুরাণী ও অন্নদানগর স্টেশনের জরাজীর্ণ ভবনে তালা ঝুলছে। টিকেট কাটার ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীরা টিকেট ছাড়াই ট্রেনে উঠছে। শুধু টিকেট নয়, বুকিং ছাড়াই মালামাল পরিবহন করা হচ্ছে। জনবল না থাকায় স্টেশনের সর্বত্র ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমে আছে।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে অফিস সূত্রে জানা গেছে, জনবল সংকটের কারণে লালমনিরহাট-সান্তাহার রেলপথে বেশকিছু স্টেশনের মতো রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর ও দেবী চৌধুরাণী স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রতিটি স্টেশনে স্টেশন মাস্টার, সহকারী স্টেশন মাস্টার, গার্ড ও অন্য লোকবলসহ মোট ১৫/১৬ জন প্রয়োজন হয়। কিন্তু এতো জনবল না থাকায় একের পর এক স্টেশন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

অন্নদানগর স্টেশন এলাকার বাসীন্দা আনোয়ার হোসেন জানান, স্টেশনটিতে রেলওয়ের কোনো লোক না থাকায় ভূতুড়ে পরিবেশ দেখা দিয়েছে। ট্রেন আসলে কিছু যাত্রী আসে।

মাজেদা বেগম নামে এক যাত্রী বলেন, স্টেশনে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেও ট্রেনের দেখা মেলে না। সিগন্যাল দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় কখন ট্রেন আসবে তাও বোঝা যায় না। এটি এখন নামেই স্টেশন।

পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সামসুজ্জোহা বলেন, অন্নদানগর ও দেবী চৌধুরাণী স্টেশন বন্ধ থাকায় পীরগাছা স্টেশনে চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে একটি ট্রেন দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রেখে অন্য ট্রেন পার (ক্রসিং) করে দিতে হয়। এতে নিয়মিত ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় হচ্ছে।

রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় কার্যালয়ের ম্যানেজার শফিকুর রহমান শফিক বলেন, লোকবল না থাকায় স্টেশনগুলো চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে লোকবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।

এবি/রাতদিন