অভিযোগের পাহাড়, তবুও বহাল তবিয়তে পাটগ্রামের সেই সমবায় কর্মকর্তা

লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসান রকির বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতির অসংখ্য অভিযোগ। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত মাসের প্রথমদিকে বিভাগীয় তদন্তের মুখোমুখিও হন তিনি। এতসব অভিযোগ, বিভাগীয় তদন্তের পরও বহাল তবিয়তেই আছেন তিনি। উল্টো যারা এই দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করেছেন তাদের মধ্যে দুজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। এতেও নিয়েছেন প্রতারণার আশ্রয়। ফলে এ নিয়ে এলাকায় শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন।

সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ আনে রংধনু ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি লি. নামে একটি সমবায়ী প্রতিষ্ঠান। গত ১৬ জুলাই সরকারি একাধিক দপ্তরে অভিযোগ দেয় ওই প্রতিষ্ঠানটি। এর প্রেক্ষিতে গত ৫ আগস্ট অভিযোগের তদন্ত করেন রংপুর বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের উপ নিবন্ধক মুহা: শাহীনুর ইসলামের নের্তৃত্বে গঠিত তদন্ত টিম।

জানা গেছে, তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মশিউর রহমান ওই তদন্ত টিমকে অভিযোগ করে জানান, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কর্মহীন দরিদ্র পরিবারের মাঝে বেসরকারি সংস্থার কিছু ত্রাণ বিতরণের জন্য উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হলে তিনি প্রত্যেক হতদরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে প্যাকেট প্রতি তিন শত টাকা করে উৎকোচ নেন।

গাভী পালন প্রকল্পে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার দুর্নীতির ব্যাপারে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাইদ নেওয়াজ নিশাত তদন্তকালে স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন।

এছাড়াও তদন্ত টিম প্রধানের সাথে যোগাযোগ করে পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল ‘সমবায় কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসান রকির বিরুদ্ধে সমবায়ী প্রতিষ্ঠান, গাভী পালন প্রকল্পের সাধারণ মানুষদের বহু অভিযোগ বিদ্যমান’ বলে জানান।

তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে তদন্ত টিমের প্রধান উপ নিবন্ধক মুহা: শাহীনুর ইসলাম সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগের ব্যাপারে তথ্য- উপাত্তসহ নতুন করে অনিয়মের লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার ব্যবস্থা না নেওয়ায় সমবায় কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসান রকি রয়েছেন বহাল তবিয়তে। ফলে উপজেলাজুড়ে নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে।

অপরদিকে দুর্নীতির অভিযোগের সংবাদ করায় উপজেলার দুই সাংবাদিকের নামে চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগপত্র সাজান ওই সমবায় কর্মকর্তা। এখানেও তিনি প্রতারণার আশ্রয় নেন। অভিযোগকারী প্রত্যায়ী সমবায় সমিতির উপজেলা সভাপতি জিয়াউর রহমান মিন্টু জানিয়েছেন, তাকে না জানিয়েই ওই অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে।

প্রতারণা করে নেয়া স্বাক্ষরসম্বলিত ওই অভিযোগপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন বলেও জানান তিনি।

জেএম/রাতদিন