অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকা পাটগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার যেন অটোরিকশা গ্যারেজ

শুরু হয়েছে ভাষার মহান মাস। আর ক’দিন পরই ২১ শে ফেব্রুয়ারি, আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এদিন ফুলে ফুলে ভরে উঠবে শহীদ মিনারের পাদদেশ। বছরের ওই দিনটি পার হলে অবহেলায় পড়ে থাকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর লক্ষ্যে নির্মিত অনেক শহীদ মিনার। তার ব্যাতিক্রম নয় পাটগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটিও।

নিতান্তই অবহেলায় পরে রয়েছে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি। শহীদ মিনারটির মূল ফটক সবসময় খোলা থাকায় চার্জার অটো রিক্সা ,ভ্যান, মোটরসাইকেল রাখা হয় সেখানে। মিনারটির আশপাশের এলাকা যেন পাবলিক টয়লেট। বাজারে আসা লোকজন এখানে অবাধে মল-মূত্র ত্যাগ করে।

বুধবার, ৯ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে দেখা গেছে, পাটগ্রাম পৌর শহরের পূর্ব বাজার এলাকায় পাটগ্রাম উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ও ডাকঘরের মাঝখানে কেন্দ্রীয় এ শহীদ মিনারটির অবস্থান। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে ২০০০ সালে স্থানীয় কিছু তরুণের উদ্যোগে ভূমি অফিসের সামনে রাতের আধারে প্রথম শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়।

পরবর্তীতে স্থানীয়দের উদ্যোগে এবং জেলা, উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় শহীদ মিনারটি পূণ:নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। তিনবছর পর সরকারি অর্থায়নে ইট, সিমেন্ট বালু দিয়ে ৫ টি মিনারবিশিষ্ট এ শহীদ মিনারটি তৈরি করা হয়।

পাটগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার যেন কুকুরের বারামখানা
ছবি: রাতদিন

এদিন দুপুরের দিকে দেখা গেছে, মূল ফটকটি খোলা। মিনারের মূল বেদী ও সিড়ির এখানে-ওখানে পলেস্তারা খসে গেছে। এ অবস্থায়ই রং করা হয়েছে।  শহীদ মিনারের সামনে রাখা হয়েছে অটো ভ্যান, রিক্সা, মোটরসাইকেল। শহীদ মিনারটির সামনের ফাঁকা জায়গা জুড়ে ময়লা, আবর্জনা, কুকুরের মল। পাদদেশে অনেকগুলো কুকুর শুয়ে রয়েছে। পাশে পড়ে আছে পরিত্যক্ত স্যান্ডেল।

ওখানেই দেখা স্নাতক প্রথম বর্ষ পড়ুয়া শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন নয়নের সাথে। তিনি ক্ষোভের সাথে বললেন, সারা বছর কেন্দ্রীয় এই শহীদ মিনারটি অবহেলা আর অযত্নে পড়ে থাকে। এর দুর্দশা দেখে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম কি শিখবে, সেটা আমাদেরকে নতুন করে ভাবতে হবে।

স্থানীয়রা জানালেন, প্রথমদিকে ক’বছর উপজেলা প্রশাসন মূল ফটকে তালা লাগিয়ে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা হতো। এর কিছুদিন পর প্রায় ১৫ বছর থেকে এটির দেখভাল করার কেউ নেই। ফলে বিভিন্ন যানবাহন রাখা হচ্ছে এখানে। অনেকে স্যান্ডেল, জুতা পায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে উঠছেন, আড্ডা মারছেন।

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুর রহমানকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুখ:জনক।

মূল ফটক তালাবদ্ধ রাখার ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন ইউএনও।

জেএম/রাতদিন