আদিতমারীতে মায়ের গায়ে সন্তানের লাঠি, প্রাণের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মা

প্রাণনাশের হুমকি ও জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ এনে নিজ সন্তানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জামেলা বেওয়া নামের এক বৃদ্ধা। ছেলের অত্যাচারে এরই মধ্যে প্রতিবন্ধি মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তিনি। নানা দেনদরবার ও মামলা করেও ন্যায়বিচার না পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেছেন বৃদ্ধা জামেলা।

আজ রোববার, ৫ সেপ্টেম্বর সকালে লালমনিরহাটের আদিতমারী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতনকারী এই ছেলেদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানান তিনি।

বৃদ্ধা জামেলা বেওয়া আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবধা ভিতরকুটি গ্রামে মৃত জসিম উদ্দিনের স্ত্রী।

সংবাদ সস্মেলনে তিনি জানান, স্বামী মৃত জসীম উদ্দিন জীবিত থাকাকালিন ছয় ছেলে ও পাঁচ মেয়েকে জমি বাটোয়ারা করে দেন। এ সময় তার প্রতিবন্ধি মেয়ে সাবিনা খাতুনকে ৫৪ শতাংশ ও স্ত্রী জামেলাকে ৭৯ শতাংশ জমি দলিল করে দেন।

স্বামীর মৃত্যুর পর তার ও তার প্রতিবন্ধি মেয়ের জমি ছেলেরা বর্গাচাষি হিসেবে চাষাবাদ করতেন। কিছু দিন পরে তিন ছেলে ঈমান আলী, সাইফুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম তার মায়ের ও প্রতিবন্ধি বোনের জমির ফসল ভাগ দেয়া বন্ধ করে দেন। ফসলের ভাগ আদায় করতে গিয়ে ছেলেদের হাতে কয়েক বার শারিরীক নিযাতনের শিকার হন তিনি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ভাবে একাধিকবার বৈঠকও হয়।

ফসলের ভাগ না পাওয়ায় নিদারুন অর্থ কষ্টে পড়ে নিজের জমি নিজেরা চাষাবাদ করার ঘোষনা দিলে, গত ৩০ জুলাই ওই তিন ভাই মিলে বৃদ্ধা মা জামেলাকে লাঠির বাড়ি ও দায়ের কোপে গুরুতর জখম করেন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আদিতমারী থানা পুলিশ বড় ছেলে ঈমান আলীকে গ্রেফতার করে। জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও মা ও প্রতিবন্ধি বোনের উপর অত্যাচার শুরু করে ঈমান আলী।

গত বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর পুনরায় নিজেদের জমি চাষাবাদের জন্য গেলে ছেলে ঈমান আলী বৃদ্ধা জামেলাকে পুনরায় মারপিট করে ঘরে আটকিয়ে রাখে। খবর পেয়ে আদিতমারী থানা পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানান তিনি। অপর দিকে ছেলে ঈমান আলী বৃদ্ধা মা ও প্রতিবন্ধি বোনকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ছেলের দেয়া প্রাণনাশের হুমকীতে প্রতিবন্ধি মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছাড়া হয়ে আত্নগোপনে রয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন বৃদ্ধা জামেলা বেওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধার প্রতিবন্ধি মেয়ে সাবিনা ও বড় মেয়ে রহিমা বেগমসহ গ্রামবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।

আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ছেলের হামলায় মা জখমের একটি মামলায় অভিযুক্ত ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তনাধিন রয়েছে।

ঘটনা তদন্ত করে আদালতে চার্জশীট পাঠানো হবে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

জেএম/রাতদিন

মন্তব্যসমূহ প্রদর্শন করা হবে (8)