এক চিতাতেই শেষ বাবা-ছেলে

সম্প্রতি পুলিশের ‘বিনা টাকায় চাকুরির’ ঘোষণা শুনে আশায় বুক বাঁধেন দিনমজুর নান্দু। ছেলেকে ভর্তি করাবেন পুলিশ বাহিনীতে। আর সেটা যদি করতে পারেন তাহলে দূর হবে অভাব। সেই ভাবনা থেকে পূর্ণকে দিয়ে আবেদন করান।

যথারীতি গত বুধবার, ২৬ জুন লালমনিরহাট পুলিশ লাইনসে অনুষ্ঠিত শারীরিক পরীক্ষায় অংশ নিতে ছেলে নিয়ে সাতসকালেই বের হন বাড়ি থেকে। এরপর আশপাশের আরও ছয় চাকুরি প্রত্যাশীসহ একটি ইজিবাইকে রওয়ানা দেন লালমনিরহাট শহরের দিকে।

তবে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক ধরে যাওয়ার পথে আদিতমারীর পলাশী বাজার এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রæতগতির একটি ট্রাক চাপা দেয় চাকুরি প্রত্যাশীদের যানটিকে। এতে ইজিবাইকটি চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান এর চালক ও নান্দু চন্দ্র। নান্দুর ছেলে পূর্ণ চন্দ্রসহ ছয়জন গুরতর আহত হলে তাদের পাঠানো হয় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই ওইদিন রাত ১০টার দিকে পূর্ণও মারা যান।

নিহত নান্দু-পূর্ণ চন্দ্রের বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ গোপাল রায় (ওয়াপদা বাজার) গ্রামে।

আদিতমারীতে ইজিবাইক-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ২
গত বুধবার ট্রাক চাপায় চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে যায় ইজিবাইকটি : ফাইল ছবি

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে,  বুধবার রাত ১০টার দিকে স্থানীয় কাকিনা শ্বশানে নান্দু চন্দ্রের চিতায় আগুন দেওয়া হয়েছে সবেমাত্র। ঠিক তখনই খবর আসে ‘মেডিক্যালে মারা গেছে পূর্ণ’। ফলে মুর্হুতেই সংবাদটি ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। শোকাহত হয়ে পড়ে পুরো এলাকা, কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বজনরা।

জানা গেছে, বুধবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে বাড়িতে আসে পূর্ণের মরদেহ। এরপর র্ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন দুপুরের দিকে বাবার চিতার আগুন নিভতে না নিভতে একই শ্বশানে তোলা হয় ছেলের দেহ।

গত বুধবারের ওই দুর্ঘটনার পর পুলিশ ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করেছে।

এবি/রাতদিন