করোনার প্রকোপে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি বন্ধ, ছুটিতে শ্রমিকরা

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় উৎপাদন বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ প্রায় ৬৮ দেশি ও চীনা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় গত ২৭ জানুয়ারি থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয় খনির ভূগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম। খনি থেকে ছুটি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে কয়লা উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত ৫১০ শ্রমিককে।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সম্প্রতি খনির অভ্যন্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্রমিক ও খনির চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের কর্মকর্তা-কমচারীদের মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দেয়। পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ৭১ কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা পরীক্ষা করা হয়। এতে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামানসহ ৩২ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

একই দিন খনির চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের ১৮৪ জনের করোনা পরীক্ষা করানো হয়। এদের মধ্যে ৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

এদিকে করোনার লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর ২৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার থেকেই খনির কয়লা উত্তোলন কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ছুটি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া কয়লা উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত দেশি শ্রমিকদের।

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম জানান, খনিতে কর্মরত ৫১০ দেশি শ্রমিকের মধ্যে ৪৫০ জনকে গত বৃহস্পতিবার এবং অবশিষ্ট ৬০ শ্রমিককে গত শুক্রবার ছুটি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে কয়লা উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের জানানো হয়।

রোববার দুপুর ১২টায় এ ব্যাপারে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খনিতে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় বৃহস্পতিবার থেকে সাময়িকভাবে কয়লা উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে খনির কোল ইয়ার্ডে প্রায় আড়াই লাখ টন কয়লা মজুদ রয়েছে। তাই খনিসংলগ্ন বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লার সংকট হবে না।

এই কয়লা দিয়েই বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র কয়েক মাস বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদন সমস্যা হবে না। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই আবার কয়লা উত্তোলন শুরু হবে বলে জানান তিনি।