কান্নায় ভেঙে পড়েলেন ওসি মোয়াজ্জেম

বহুল আলোচিত নুসরাত জাহান রাফির জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় আত্মপক্ষ শুনানিতে এসে আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন। এ সময় তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। আত্মপক্ষ শুনানিতে প্রায় ১৫ মিনিট মৌখিক বক্তব্য দেওয়া সময় একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওসি মোয়াজ্জেম।

ওসি মেয়াজ্জেম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ সালে চাকরি ফিরে পান। চাকরি জীবনে তিনি অনেক আসামি ধরেছেন। সুনামের সঙ্গে কাজ করায় ২০০ পুরস্কার পেয়েছেন। গত বছর দুবার চট্টগ্রাম বিভাগে তিনি বেস্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। এসব বলে ওসি মোয়াজ্জেম আসল ঘটনার বিবরণ দিতে শুরু করেন।

তিনি আরো বলেন, আমার থানায় তখন কোনো নারী অফিসার ছিল না। তাই আমি মেয়র, আমার অফিসার ও মাদ্রাসার লোকসহ সবার সামনে নুসরাতকে জিজ্ঞাসা করি। সেখানে নুসরাতের দুই বান্ধবী ও মাদ্রাসার কর্মচারী নুরুল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদেরও ভিডিও করেছি।

‘আমি নুসরাতকে বলেছি, তুমি আমার মেয়ের মতো। আমার প্রমাণের প্রয়োজন ছিল। তাই জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও করি। প্রমাণ পেয়ে মামলা নিয়ে প্রিন্সিপালকে আটক করি। পরদিন ২৮ মার্চ হাজার খানেক লোক প্রিন্সিপালের মুক্তির জন্য মানববন্ধন করে। সেদিন কয়েজন সাংবাদিক আমাকে প্রশ্ন করে নির্দোষ সিরাজদৌলাকে কেন গ্রেপ্তার করেছি।

এ সময় মোয়জ্জেম যোগ করেন, ‘আমি এ মামলার মাধ্যমে বড় সাজা পেয়েই গেছি। আমার ছেলে স্কুলে যেতে পারে না। আমার মেয়ে এবং মা সজ্জাসায়ী। আমার পরিবার ধ্বংশ হয়ে গেছে। আমি ১০টি খুন করলেও এমন সাজা বোধহয় আমার হতো না।’

উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ সিরাজ উদদ্দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর মামলা তুলে নেওয়ার জন্য গত ৬ এপ্রিল রাফিকে মুখোশ পরা ৪-৫ জন চাপ প্রয়োগ করলে সে অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সাথে লড়ে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে সে মারা যায়। ওই ঘটনার হত্যা মামলায় গত ২৪ অক্টোবর আদালত ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন।

এনএ/রাতদিন