কাবিননামায় ‘কুমারী’ শব্দের পরিবর্তে ‘অবিবাহিতা’ যোগ করতে হাইকোর্টের নির্দেশ

কাবিননামার (নিকাহনামা) ফর্মে ৫ নম্বর কলামে কনে ‘কুমারী’ থাকা শব্দটি বাদ দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। এর পরিবর্তে ‘অবিবাহিতা’ শব্দটি যোগ করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া ৪ নম্বর কলামে ‘ক’ সংযুক্ত করে ছেলেদের ক্ষেত্রে ‘বিবাহিত’, ‘বিপত্নীক’,‘তালাকপ্রাপ্ত’ কিনা তা সংযোজন করতে বলা হয়।

রোববার, ২৫ আগস্ট  বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে এ রায় দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন জেড আই খান পান্না ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা।বিষয়টি নিয়ে সম্পূরক আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

আইনজীবী জেড আইন খান পান্না সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আদালত বলেছেন ‘কুমারী’ শব্দটা থাকা ঠিক না। সেটা বাদ দেয়া এবং কাবিনের ৪ নম্বর কলামে বরের ক্ষেত্রে সে বিবাহিত কি-না, তালাকপ্রাপ্ত কি-না অথবা বিপত্নীক কি-না সেটা লিখতে হবে।

আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা বলেন, ‘৫ নম্বর কলামের ‘কুমারী’ শব্দে আমাদের আপত্তি ছিল । ‘কুমারী’ বিষয়টা পুরোপুরি প্রাইভেসির ব্যাপার । রাইট টু প্রাইভেসি অনুযায়ী এ রিট করেছি  ‘

তিনি বলেন, কাবিননামার ফর্মের (বাংলাদেশ ফর্ম নম্বর-১৬০০ ও ১৬০১) পাঁচ নম্বর কলাম কেন বৈষম্যমূলক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট । একই সঙ্গে কেন ‘কুমারী’ শব্দটি বিলোপ করে কাবিননামা সংশোধন করা এবং বরের বৈবাহিক অবস্থা-সম্পর্কিত কোনো ক্রমিক কাবিননামায় উল্লেখ করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল ।

রুলের শুনানিতে এ বিষয়ে ধর্মীয় মতামত দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন।

কাবিনামার ওই অনুচ্ছেদটি বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, নারীপক্ষ এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ২০১৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রিট আবেদনটি করে। রিটের বিবাদীরা (রেসপনডেন্ট) হচ্ছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রিন্টিং এবং প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচাকলসহ সংশ্লিষ্টরা।

কাবিননামায় শুধু কনের বৈবাহিক অবস্থা ও তথ্য সন্নিবেশিত করার জন্য অনুচ্ছেদ রয়েছে। তবে বরের বৈবাহিক অবস্থা-সম্পর্কিত কোনো অনুচ্ছেদ নেই। এটা নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক। সংবিধান অনুসারে কারও প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা যাবে না। ওই অনুচ্ছেদটি সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ পরিপন্থী বলে রিটে দাবি করা হয়।

এসকে/রাতদিন