কালীগঞ্জে ছাত্রীর যৌনহয়রানির মামলায় শিক্ষক বরখাস্ত

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নের দলগ্রাম দাখিল মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জুয়েল আলম নামের এক বিএসসি শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় ২৭ অক্টোবর মাদরাসার ওই ছাত্রী উপজেলা নির্বাহী অফিসার,কালীগঞ্জ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। যার অনুলিপি জেলা প্রশাসক,পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দফতর বরাবরে প্রেরণ করেন। পরে,থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করেছেন।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল হাসান জানান,‘অভিযোগ পেয়ে গত ৩১ অক্টোবর মাদরাসায় গিয়ে সরেজমিন তদন্ত করি। মাদরাসার শিক্ষক, সুপার, কমিটির সদস্য, সভাপতি, অভিভাবক, শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। ভীকটিমকে থানায় অভিযোগ করতে পরামর্শ দিয়েছি।’

পরে, ভীকটিম কালীগঞ্জ থানায় শিক্ষক জুয়েল আলমের নামে একটি মামলা রুজু করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, ‘মামলাটি অতীব গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ’

অভিযোগ ও মামলার আরজি সুত্রে জানা যায়, দলগ্রাম দাখিল মাদ্রাসা শিক্ষক জুয়েল আলম বুকশিলা কালীমন্দির সংলগ্ন একটি বাসা ভাড়া নিয়ে, সেখানে প্রাইভেট সেন্টার পরিচালনা করে আসছেন। সেখানে প্রাইভেট পড়েন ওই ছাত্রী। সেই সুবাদে ওই ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়ানোর ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন সময় অশ্লীল কথাবার্তা ও কু প্রস্তাব দেন জুয়েল। একপর্যায়ে গত ২২ অক্টোবর প্রাইভেট শেষে শিক্ষক জুয়েল ওই ছাত্রীকে টেনে রুমের ভিতর নিয়ে কুপ্রস্তাব দেন। শিক্ষকের এমন আচরণে ওই ছাত্রী হতবিহ্বল হয়ে কান্না শুরু করেন। পরে ,ওই ছাত্রী তার পরিবারকে বিষয়টি অবগত করেন।

সামাজিক মান-সম্মানের কথা বিবেচনা করে এতদিন কেউ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে চাননি।

একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, শিক্ষক জুয়েল এর আগেও এ ধরনের কর্মকান্ড ঘটিয়েছেন। প্রায়ই ছাত্রীদের সাথে অশ্লীল আচরণসহ নানা ধরণের কুপ্রস্তাব দেন তিনি।

জুয়েল মাষ্টারের এ ধরনের আচরন সম্পর্কে স্থানীয় এলাকাবাসি ও অভিভাবকরা ক্ষোভের সাথে জানান, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জুয়েলের এসব অপকর্মের জন্য ৬ মাস আগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিলেন। পরে কমিটির কাছে ভুল স্বীকার করলে দুই মাস পর বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করা হয় ।

এ বিষয়ে গত রোববার,৩ নভেম্বর সরজমিন গেলে মাদরাসার সুপার মোঃ নুরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৩১ অক্টোবর ইউএনও স্যার মাদরাসায় এসে ঘটনার তদন্ত করেছেন। অই দিনই ম্যানেজিং কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সহকারী শিক্ষক জুয়েল আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’

স্থানীয়রা জানান, ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ওই শিক্ষক একাধিক ছাত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টাও করে। লোকলজ্জার ভয়ে কেউ এর প্রতিবাদ করেনি। তবে অনেকে তার কাছে প্রাইভেট পড়া বন্ধ করে দিয়েছে।

এদিকে অভিযুক্ত বিএসসি শিক্ষক জুয়েল এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছে একটি মহল। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবী করেন ।

জেএম/রাতদিন