কালীগঞ্জে প্রতিবন্ধীকে বিবস্ত্র করে মারপিট, আসামীদের পাচ্ছে না পুলিশ

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধিকে বিবস্ত্র করে মারপিট ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারপিটের শিকার সেকেন্দার আলী নামের ৪৯ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়া হয়। যা স্বল্প সময়ে ভাইরাল হয়।

শুক্রবার, ২৪ জুন দুপুরে আদালতের নির্দেশে কালীগঞ্জ থানায় এ বিষয়ে একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। 

এর আগে গত ৫জুন রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের উত্তর গোপাল রায় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

আহত প্রতিবন্ধি সেকেন্দার আলী ওই গ্রামের মৃত নছর উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় ভ্যান চালক। 

আদালতে দায়ের করা মামলা সুত্রে জানা গেছে, ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতেন বুদ্ধি প্রতিবন্ধি সেকেন্দার আলী। তার প্রতিবেশী আব্দুর জব্বারের ছেলে স’মিল মিস্ত্রী জাহেদুল ইসলামের কাছে গাছ পরিবহন বাবদ ভাড়ার টাকা পাওনা ছিলেন ভ্যান চালক সেকেন্দার আলী। সেই পাওনা টাকার চাইতে গেলে স্থানীয় সুকানদিঘী বাজারে বিতর্ক হয় তাদের। গত ৫জুন রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাজারের কাজ শেষে ভ্যান নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন সেকেন্দার আলী। পুর্ব বিরোধের জের ধরে নিজেদের বাড়ির পাশে পথ রোধ করেন জাহেদুল ইসলাম ও তার তিন ভাইসহ পরিবারের লোকজন। 

এ সময় তারা ভ্যান চালক সেকেন্দার আলীকে বিবস্ত্র করে গাছের ডাল ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন। জীবন বাঁচানোর তাগিদে হামলাকারীদের হাতে পায়ে ধরেও রক্ষা হয়নি সেকেন্দার আলীর। তার আর্তচিৎকারে স্ত্রী আর্জিনা এবং মেয়ে তাকে বাঁচাতে এলে তাদেরকেও মারপিট ও শ্লীনতাহানী করে হামলাকারীরা।

পরে স্থানীয়রা ছুটে এসে হামলাকারীদের কবল থেকে সেকেন্দার আলীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বিবস্ত্র করে মারপিটের এই পুরো ঘটনাটি হামলাকারীদের একজন ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিলে তা ভাইরাল হয়। 

দীর্ঘ ৮দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হলে এ ঘটনায় জাহেদুল ইসলামকে প্রধান করে তার পরিবারের ৬জনের বিরুদ্ধে গত ১৪জুন  লালমনিরহাট আদালতে মামলা দায়ের করেন ভ্যান চালক সেকেন্দার আলীর স্ত্রী আর্জিনা বেগম। আদালত মামলাটি গ্রহন করে কালীগঞ্জ থানাকে নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ প্রদান করেন। অবশেষে শুক্রবার(২৪জুন) সেই মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।

কালীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) গোলাম রসুল জানান, অমানুষিক নির্যাতনের ভিডিওটি তিনি দেখেছেন। তাৎক্ষনিক হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে অফিসারও নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো কিন্তু আসামীরা পালিয়ে যাওয়ায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।

থানা কর্তৃপক্ষ মামলা নিতে চেয়েছিলো কিন্তু বাদি অন্যের কথায় আদালতে মামলা করেছেন বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।