কুড়িগ্রামের প্রথম করোনাজয়ী তাজুল, পুষ্পবৃষ্টিতে ফিরলেন বাড়ী

দীর্ঘ ১৭ দিন করোনার সংগে লড়াই করে সুস্থ্য হয়ে বাড়ী ফিরলেন কুড়িগ্রামের তাজুল ইসলাম। নারায়ণগঞ্জফেরত তাজুল গত ১৪ এপ্রিল করোনা পজেটিভ হিসেবে শনাক্ত হন। তারপর থেকেই হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

শনিবার, ২ মে বিকেলে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনামুক্তের ছাড়পত্র নিয়ে নিজ বাড়ির পথে রওনা দেন তাজুল।

এসময় তাকে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দেয়া হলো ফুলেল শুভেচ্ছা।  

অন্যদিকে গত বৃহষ্পতিবার তার বাবা বার্ধক্যজনিত রোগে মারা গেলেও আইসোলেশনে থাকা তাজুলকে তা জানানো হয়নি।

ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউপির ধর্মপুর গ্রামে নিজ বাড়ী গিয়েই এ যুবক শুনতে পান তার বাবা আব্দুল হক কাচু চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন বলেন, ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় তাজুল ইসলামকে মৃত্যুর খবরটি জানানো হয়নি। বাবার মৃত্যুর খবরে হতাশাগ্রস্ত হতে পারেন এমন দিক বিবেচনা করে বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছে।

ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শামসুন্নাহার বলেন, গত ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় তাজুল ইসলামের নমুনা পজিটিভ পাওয়ার পর তার বাবাসহ পরিবারের ৯ সদস্যের নমুনা সংগ্রহ করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে পাঠোনো হয়। কিন্তু তাদের সবার রিপোর্ট নেগেটিভ পাওয়া গেছে। তার বাবা অন্য রোগে মারা গেছে।

প্রসংগত, ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় তাজুলে নমুনা পরীক্ষায় করোনা  পজিটিভ পাওয়া যায়। ওইদিন রাতেই ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় তাকে। হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার পুরুষ ওয়ার্ডের ২ নম্বর কেবিনের আইসোলেশন বেডে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

জানা গেছে, যাওয়ার সময় তাজুলের সাথে দেয়া হয়েছে নানা খাদ্য সামগ্রী। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামসুন্নাহার তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কিনে দিয়েছেন, ১০ কেজি চাল, ৩ কেজি ডাল, ৫ কেজি আলু, ২ কেজি পিঁয়াজ, ২ লিটার তেল, ১ কেজি লবণ, ১০টা মুরগী, ২০ টি ডিম, ৩২ টি কলা, ২ কেজি আপেল, ১ কেজি মাল্টা, ১টি হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ১টি টিস্যু বক্স, ১ জোড়া হ্যান্ড গ্লোভস ও ১ টি মাস্ক। আর থানার অফিসার ইনচার্জ রাজীব কুমার রায় নিজের তহবিল থেকে দিয়েছেন ২০ কেজি চাল।

তাজুলকে বিদায় জানানোর সময় সবার চোখে মুখে ছিল খুশির ঝিলিক। বিদায়ের সময় ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থাকতে না পারলেও তাজুলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সরকার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মাছুমা আরেফিন।

জেএম/রাতদিন