কোয়ারেন্টাইন জীবনে বাড়ছে দাম্পত্য কলহ

ইউরোপে করোনা ভাইরাসের কারণে ঘরে থাকা মানুষের পারিবারিক জীবনে সহিংসতা বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর এএফপির। বার্লিন, প্যারিস, মাদ্রিদ, রোম ও ব্রাতিস্লাভায় যে সংস্থাগুলো পারিবারিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের সহায়তা দিয়ে থাকে, তারাই এই শঙ্কার কথা জানিয়েছে।

এমন এক সময়ে তারা এই আশঙ্কা প্রকাশ করল, যখন করোনা ভাইরাস মহামারির উৎপত্তিস্থল চীন থেকে সরে গেছে ইউরোপে। বহু মানুষের জন্য তাদের বাড়ি আর নিরাপদ নয়, এই মন্তব্য করেছে জার্মান ফেডারেল এসোসিয়েশন অব উইমেনস কাউন্সেলিং সেন্টার্স এন্ড হেলপলাইনস (বিএফএফ)। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে মনের ওপর চাপ পড়ছে। দুশ্চিন্তা বাড়ছে। নারী ও শিশুদের ওপর পারিবারিক ও যৌন সহিংসতার ঝুঁকিও এতে করে বাড়ছে বলে মনে করেএসোসিয়েশন।

এই ঝুঁকি শুধু বাড়িতে সীমাবদ্ধ নেই, যেখানে সহিংসতার ইতিহাস পুরনো। স্বেচ্ছায় বন্দি থাকার এই কষ্টের পাশাপাশি সামনের দিনে চাকরির নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমস্যা বাড়বে। সংঘাতও বাড়াবে এসব সমস্যা। এসব সমস্যা ঘরে চাপ বাড়াচ্ছে, এফসিপিই প্যারেন্টস ফেডারেশন ইন দ্য আপার রাইনের প্রধান ফ্লোরেন্স ক্লদেপিয়ের এই মন্তব্য করেন। এই অঞ্চলটি ফ্রান্সের সবচেয়ে বিপর্যস্ত এলাকাগুলোর একটি।

তিনি বলেন, যেসব পরিবারে আগে কখনো কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি, সেই পরিবারগুলোয় অভিভাবকেরা চাপ সহ্য করতে না পেরে ভেঙে পড়েছেন। চীন কয়েক সপ্তাহের লকডাউন শেষে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছে। নারী অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠান উয়েইপিং নারীদের ওপর সহিংসতার হার তিন গুণ পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানাচ্ছে।

জার্মান ফেডারেশন বলছে, শিশু, কিশোর ও নারীরা যারা এখন মানসিক ও শারীরিকভাবে পারিবারিক সহিংসতার শিকার হচ্ছে, তাদের আসলে নির্যাতকেরা হাতের কাছে পাচ্ছে। জার্মানিতে শিশু সুরক্ষা এসোসিয়েশনের প্রধান রাইনার রেটিনজার বলেন, স্কুল, খেলার ক্লাব ও যুবকদের ক্লাবগুলো বন্ধ করা হয়েছে ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া ও হাসপাতালগুলোয় রোগী উপচে পড়া ঠেকাতে।

এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ইতালির মতো দেশগুলো যেখানে লকডাউন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে, নির্যাতনের শিকার মানুষকে কিছু আইন-কানুন থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, যেমন- আশ্রয় কেন্দ্রে থাকার জন্য কেন তারা বাড়ি থেকে চলে এসেছেন, সে বিষয়ক কাগজপত্র দেখাতে হচ্ছে না। এ পরিস্থিতি যদি আরো কয়েক মাস স্থায়ী হয়, তাহলে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা বেড়ে অকল্পনীয় পর্যায়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞরা।

এনএ/রাতদিন