চিলমারীতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা, অষ্টমীর স্নানে মানুষের ঢল

লকডাউনকে উপেক্ষা করে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে অষ্টমীর স্নানে মানুষের ঢল নেমেছে। প্রতি বছর চৈত্রে শুল্ক পক্ষের অষ্টম দিনে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী অষ্টমী স্নান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ দিন নেপাল, ভুটান ও ভারতসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ৩-৪ লাখ পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটে ব্রহ্মপুত্র তীরে। সে মোতাবেক আজ মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল অষ্টমী স্নান ও মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

তবে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশব্যাপী সব প্রকার গণজমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং লকডাউনে ব্রহ্মপুত্রে এবার অষ্টমী স্নান হবে না মর্মে জানায় উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসনকে উপেক্ষা করে ব্রহ্মপুত্র তীরে পুণ্যার্থীদের ঢল নামে আজ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল সোমবার গভীর রাত থেকে বিভিন্ন অঞ্চলের সনাতন ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীরা ব্রহ্মপুত্র তীরে সমবেত হয়ে স্নান উৎসবে যোগ দেয়।

স্নান উৎসবে যোগ দেয়া জীবন চন্দ্র ও নয়ন চন্দ্র জানান, ‘কোনো করোনা-টরোনা নাই। আমাদের কোন মাস্ক-টাস্ক লাগে না।’

ভূরুঙ্গামারী থেকে আসা স্মৃতি রাণী ও কাউনিয়া থেকে আসা আদরী রাণী বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী ও বৃহৎ একটি পর্ব অষ্টমী স্নান, যা বছরে একদিন আসে, দিনটি আমাদের জন্য পাপ মোচনের। যতই লকডাউন হোক ধর্ম তো পালন করতে হবে।’

পুণ্যার্থী বিশ্বনাথ বলেন, ‘গত বছর করোনার কারণে স্নান করতে পারিনি। এবার শান্তিপূর্ণভাবে স্নান করতে পেরেছি।’

ব্রাহ্মণ পবিত্র চক্রবর্তী বলেন, ‘করোনায় কোনো সমস্যা হবে না, ভগবান আছে।’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চিলমারী শাখার সভাপতি ডা. সলিল কুমার সরকার জানান, অষ্টমী স্নানের বিষয়ে ইউএনওর কাছে গিয়েছিলাম, তিনি লকডাউনের কারণে অনুমতি দেননি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্নান না করতে মাইকিং করা হয়নি। কিংবা আমাদেরও মাইকিং করতে বলা হয়নি।

চিলমারী থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ব্রহ্মপুত্র তীরে যাতে জনসমাবেশ না ঘটে সেজন্য রাত থেকে বিভিন্ন মোড়ে টহল ছিল। রাতে ইউএনওর সঙ্গে ঘাটে গিয়ে সবাইকে বারণ করেছি। অনেককে ফেরতও পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে অলিগলি দিয়ে কিছু লোক চলে গেছে।

ইউএনও এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্ বলেন, গত রাত ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে লোকজনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মানুষ যদি নিজ থেকে সচেতন না হয় তাহলে কার কী করার আছে। আমাদের পক্ষ থেকে যা করার তা করেছি।

এবি/রাতদিন

মতামত দিন