ছেলের চাকুরি ফিরে পেতে ব্যাংকের সামনে অনশনে মুক্তিযোদ্ধা

ছেলের চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত বাতিল ও পুনর্বহালের দাবিতে রংপুরে আমরণ অনশন শুরু করেছে এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। চাকুরি ফিরিয়ে না দেওয়া হলে মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনসহ বেঁচে থাকাকালীন সকল রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা রঙ্গলাল মহন্ত ।

গত মঙ্গলবার,১৯ নভেম্বর থেকে টানা তিনদিন রংপুর নগরীর বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান নিয়ে আমরণ অনশন মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। এদিকে টানা ৩দিনেও দেখা মেলেনি বাংলাদেশ ব্যাংকের রংপুর শাখার কোন কর্মচারী বা কর্মকতার। এই কনকনে শীতেও রাতে সেখানে অবস্থান নিয়ে আমরণ অনশনে মুক্তিযোদ্ধাসহ তার পরিবারের সদস্যরা।

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর সকালে গিয়ে দেখা গেছে, আমরণ অনশনে মুক্তিযোদ্ধা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। যার কারণে স্যালাইন লাগিয়ে অনশনস্থলে শুয়ে আছেন।

মুক্তিযোদ্ধা রঙ্গলাল মহন্ত বলেন, তার ছেলে মুদ্রা নোট পরীক্ষক সাধন চন্দ্র মহন্তের বিরুদ্ধে হিসাবের গড়মিলের মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু তদন্ত না করেই বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় তার ছেলেকে।

তিনি আরও বলেন, যে কারণে আমার ছেলেকে চোর সাব্যস্ত করা হয়েছে। সেই একই অভিযোগ থাকা সত্বেও পুন:মুদ্রা নোট পরীক্ষককে লঘু শাস্তি দিয়ে চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে। অথচ সাধন চন্দ্র মহন্তকে ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে ফেলে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়ে কৌশলে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে। যা অন্যায় ও অবিচার। দ্রুতসুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ছেলেকে চাকরিতে বহালের দাবিও জানান। দাবি আদায় না হলে মৃত্যুর আগে এবং পরে সকল রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও সুযোগ সুবিধা বর্জনের ঘোষণা দেন মুক্তিযোদ্ধা রঙ্গলাল মহন্ত।

এদিকে চাকরীচ্যুত হওয়া সাধন চন্দ্র মহন্তের দাবি, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুন:তদন্ত করলে তিনি নির্দেশ প্রমাণিত হবে বলে দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, আমি ২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে আমি সততার সাথে চাকরি করে আসছি। এ বছরের মে মাসে বান্ডিল করা প্যাকেট থেকে দুই দফায় মোটে এক হাজার পঞ্চাশ টাকা কম পাওয়ার যে অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে, এটা পরিকল্পিত। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।

এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রংপুর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলার রহমান কথা বলতে রাজি হননি। তবে তৎকালীন বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুর শাখার নির্বাহী পরিচালক গোলাম হায়দার বলেন, আমি দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছিল, তা তদন্ত করে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এনএ/রাতদিন