ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবিতে সরব রংপুর, দফায় দফায় প্রতিবাদ সমাবেশ

মন্ত্রী পরিষদের সভায় আইনমন্ত্রীকে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি উত্থাপনের আহ্বান জানিয়েছে রংপুরের সুশীল সমাজ। তারা অভিযোগ করেন, বিচারিক দীর্ঘ সূত্রিতা ও রায় কার্যকরে দৃষ্টান্ত তৈরি না হওয়াতে দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ এবং নিপীড়নের ঘটনা বাড়ছে।

শনিবার, ১০ অক্টোবর সকাল ১১টায় রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত ধর্ষণ বিরোধি প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। এছাড়াও এদিন মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে একই দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচী আয়োজন করে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন। এতে নগরীর ২৫টির বেশি বেসরকারি সংস্থা ও বিভিন্ন সংগঠন অংশ নেন।

সমাবেশে রংপুরের কারমাইকেল কলেজ শিক্ষার্থী রুখিয়া রাউতকে ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যাসহ নোয়াখালিতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, ধর্ষণ ও সারাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ ও আইন প্রয়োগের আহ্বান জানান।

এসময় ‘ধর্ষকের ফাঁসি-কাড়বে মুখের হাসি, ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই-ধর্ষকের ফাঁসি চাই, মোদের দাবি একটাই-ধর্ষকের ফাঁসি চাই, ধর্ষকের কোনো দল নেই-ধর্ষক তুই ধর্ষক, ধর্ষক কোনো পুরুষ নয়, ধর্ষক শুধু পশুই হয়’ সহ বিভিন্ন শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে প্রেসক্লাব চত্বর।

সুজনেরর মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সুজনের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবার রহমান, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের বনমালী পাল, পেশাজীবী ফোরামের অ্যাডভোকেট শামীমা আখতার, হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস ফোরামের সভাপতি মোশফেকা রাজ্জাক, আরডিআরএস বাংলাদেশের প্রজেক্ট ম্যানেজার ফরিদা ইয়াসমিন, স্বর্ণনারী এসোসিয়েশনের মঞ্জুশ্রী সাহা, এনএনএমসি অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্ম এর সভাপতি উজ্জ্বল চক্রবর্তী প্রমুখ।

এতে বক্তারা বলেন, সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণের পর নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন। এভাবে একের পর এক ধর্ষণ ও নারীর প্রতি নিপীড়ন, নির্যাতন বেড়েই চলছে। বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা এবং রায় কার্যকরে কালক্ষেপনের কারণে নির্যাতন, ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে।

এসময় অবিলম্বে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আগামী সোমবারে অনুষ্ঠিতব্য কেবিনেট মিটিংয়ে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি উত্থাপনের জন্য আইনমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

মানববন্ধন সমাবেশে বেগম রোকেয়া নারী সংগঠন, আরডিআরএস বাংলাদেশ, ইয়থ ইন্ড নেটওয়ার্ক, কন্যাশিশু এ্যাডভোকেসি, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ, ন্যাশনাল স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন, হিউম্যান রাইটস, মাপা, এনএনএমসি, যৌন হয়রানি নির্মূলকরণ নেটওয়ার্ক,অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্ম, তৃণমূল নারীনেত্রী নেটওয়ার্ক, বিজিএস ইয়ুথ ফোরাম, স্বর্ণনারী এসোসিয়েশন, সুশীল সমাজসহ ২৫টির বেশি সংগঠন অংশ নেন।

এ ছাড়াও দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে নগরীর টাউন হল চত্বরে সম্মিলিত লেখক সমাজ, লালবাগ মোড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং প্রেসক্লাব চত্বরে জাতীয় যুব জোট মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।

জেএম/রাতদিন