নদী কেড়ে নিয়েছে বিদ্যালয়, তাই গাছতলায় পাঠদান

ব্রহ্মপুত্র নদের ভয়াবহ ভাঙনে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কেতকীর হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুটি ভবনসহ আসবাবপত্র, বেঞ্চ, টেবিল ও স্কুলের খেলার মাঠটি নদীগর্ভে হারিয়ে যায়। গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার আরও ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্রও প্রায় একই রকম।

বিদ্যালয়ভবনের অভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে খোলা আকাশের নিচে। ভবন স্থাপনে জমি না পাওয়ায় নির্মান করা যাচ্ছে না বিদ্যালয় ভবন। রোদ-বৃষ্টিতে অসহায় শিক্ষার্থীরা খোলা আকাশের নিচে বসেই নিয়মিত স্কুল করছে। সামনে সমাপনিী পরীক্ষা। তাই কোমলমতি শিশুদের নিয়ে উদ্বেগে অভিভাবকরা।

কেতকীর হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাধুরী আক্তার জানান, স্কুলটি নদীতে বিলীন হওয়ায় লেখাপড়ায় মনোযোগ বসে না। একটি ছাপরা ঘরে কয়েকটি শ্রেণির ক্লাস একসঙ্গে হয়। ফলে শব্দের কারণে লেখাপড়া করতে কষ্ট হয়। এছাড়াও রোদ বৃষ্টিতে গাছ তলায় পাঠ দান অনেক কষ্টের।

ছবি: সংগৃহীত

কেতকীর হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজিয়া খাতুন জানান, বিদ্যালয় ভবনের পাশে গাছতলা ও ছাপড়া ঘরে বসে ক্লাস নিতে হয়। ক্লাস নিতে গিয়ে মন খারাপ হয়, কষ্টে চোখে জল আসে। সামনে সমাপনী পরীক্ষা। কোলাহলপূর্ণ খোলা জায়গায় বসে ক্লাস নিতে নানা সমস্যায় পড়েন শিক্ষকরা। রোদ-বৃষ্টিতে এই সংকট আরও বাড়ে। দ্রুত সময়ের মধ্যে স্কুলের ভবন নির্মাণের জোর দাবি জানান তিনি।

ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. হোসেন আলী জানান, এ বছর বন্যা ও নদী ভাঙনের ফলে বিদ্যালয় ধসে ও জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে মানবিকতা বিবেচনা করে সংশিষ্ট এলাকাগুলোতে কেউ আগ্রহী হয়ে জমি দান করলে স্কুল ভবন তৈরি সহজ হতো।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলায় পাঁচটি, ফুলছড়ি উপজেলায় পাঁচটি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে শিক্ষা খাতে দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

শান্ত/রাতদিন