নিউ ইয়র্কে প্রাণ গেল বাংলাদেশি সাংবাদিকের

কথা ছিল আর কিছু টাকা উঠলেই তিনি ফিরে যাবেন বাংলাদেশে। নিজের প্রিয় মানুষগুলোর কাছে। সেখান থেকে ভারতে গিয়ে কিডনি প্রতিস্থাপন করাবেন। তার জন্যে জোগাড় হয়েছিল কিডনিদাতাও। অর্থ জোগাড়ের জন্যে উঠে পড়ে লেগেছিলেন তার সাংবাদিক সহকর্মী, বন্ধু, স্বজনরা। কিন্তু হায়, প্রাণঘাতী একটি ভাইরাস কেড়ে নিল সাংবাদিক স্বপন হাইয়ের জীবন। বাংলাদেশে যাওয়া হলো না তার।

শেষ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন খ্যাতিমান ফটো সাংবাদিক ও আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের কার্যকরি সদস্য এ হাই স্বপন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সবার কাছে তিনি স্বপ্ন হাই নামে পরিচিত ছিলেন।

গতকাল সোমবার, ৩১ মার্চ নিউ ইয়র্ক সময় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে কুইন্স হাসপাতালে তিনি মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন। ভারতে তার কিডনি প্রতিস্থাপনের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল।

নিউ ইয়র্কের সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে স্বপন হাইয়ের জন্য একটি ফান্ডরেজিং কনসার্ট করা হয় গত ৬ মার্চ। যেখানে সাংবাদিক ও কমিউনিটির অনেক বন্ধুরা সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন। গত ২৮ মার্চ তাঁর দেশে চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় তা হয়ে ওঠেনি। এর মধ্যে তিনি কিডনি ডায়ালাইসিসের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে তার করোনা পজেটিভ পাওয়া যায়। শেষ পর্যন্ত চলেই গেলেন স্বপন হাই।

স্বপন হাই বাংলাদেশের বাংলাবাজার, মানবজমিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন। ২০১৪ সাল থেকে তিনি নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছিলেন। এর মধ্যে তার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়। গত বছর থেকে দেখা দেয় কিডনি জটিলতা। তখন থেকেই নিয়মিত ডায়ালাইসিসে ছিলেন।

খ্যাতিমান এই সাংবাদিক নিউ ইয়র্কের প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা, সাপ্তাহিক আজকাল ও টিবিএন২৪ টেলিভিশনে কাজ করেছেন। তার এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী ঢাকার একটি স্কুলে চাকরি করেন।

আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সভাপতি দর্পণ কবীর তার দেশে ফেরাসহ সার্বিক বিষয়ে তত্ত্বাবধান করছিলেন। নিউ ইয়র্কে স্বপন তার বড় ভাই মতিনের জ্যামাইকার বাসায় থাকতেন। স্বপন হাইয়ের মৃত্যুতে নিউ ইয়র্কে শোকের পরিবেশ আরো শোকাবহ হয়ে উঠেছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সোসাইটির তত্ত্বাবধানে হাসপাতালের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে স্বপন হাইকে নিউজার্সির বাংলাদেশ সোসাইটির নিজস্ব কবস্থানে দাফন করা হবে।

সূত্র: কালের কন্ঠ অনলাইন

এবি/রাতদিন