নিজের লিভার দিয়ে স্বামীকে বাঁচালেন নূপুর

অসুস্থ স্বামী জামিলুর রহমান বুলবুলকে (৪৫) বাঁচাতে নিজের লিভারের অংশ দান করে অনন্য নজীর স্থাপন করলেন বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার গৃহবধূ মাকছুদা জাহান নূপুর।

গতকাল রোববার, ১৮ আগষ্ট  ভারতের চেন্নাই অ্যাপোলো হাসপাতালে লিভার স্থাপন করা হয়েছে।

নূপুরের বড় বোন মহিষাবান বহুমুখি উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক পাপিয়া আকতার সংবাদমাধ্যমকে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে তার বোন ও ভগ্নিপতি দু’জনই সুস্থ আছেন।

জানা গেছে, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়নের মাদারীপাড়া গ্রামের মৃত ইয়াছিন আলী তরফদারের একমাত্র ছেলে জামিলুর রহমান বুলবুল পেশায় ব্যবসায়ী। একযুগ আগে প্রেমের সম্পর্কে পার্শ্ববর্তী কাতলাহার গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল মজিদের মেয়ে মাকছুদা জাহান নূপুরকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে জাইমা রহমান ইলা (১১) ও নাবিল রহমান নূর (৯) দুটি সন্তান রয়েছে।

তাদের দাম্পত্যজীবন সুখেই কাটছিল। প্রায় দু’বছর আগে বুলবুলের লিভার নষ্ট হয়ে যায়। ফলে স্থানীয় চিকিৎসা শেষে ভারতের চেন্নাই অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।

চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত লিভার প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। এতে স্বামীকে লিভার দিয়ে সুন্দর এ পৃথিবীতে বাঁচিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেন তার স্ত্রী নূপুর।

নূপুরের বোন পাপিয়া আকতার জানান, রোববার ভারতের চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসকরা ১৮ ঘণ্টার অপারেশনে নূপুরের শরীর থেকে লিভার নিয়ে বুলবুলের শরীরে প্রতিস্থাপন করেছেন। নির্দিষ্ট সময়ে তাদের জ্ঞান ফিরেছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দু’জনই ভালো আছেন। সুস্থ হলে তারা দেশে ফিরে আসবেন।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের অর্থপেডিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজাউল আলম জুয়েল জানান, রক্তের সম্পর্ক ছাড়া লিভার ম্যাচিং হওয়া খুব কঠিন। এরপরও ওই দম্পতির ম্যাচিং হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরও জানান, পুরো লিভার নয়; একটা অংশ কেটে প্রতিস্থাপন করা হয়ে থাকে। পরবর্তীকালে লিভারদাতার কেটে নেয়া অংশ রিজেনারেশন হয়ে থাকে।

এবি/রাতদিন