পঙ্গু স্বামীর চিকিৎসায় নি:স্ব সালেহা, হাত পাতছেন দ্বারে দ্বারে

লালমনিহাটের হাতীবান্ধায় ট্রাকের ধাক্কায় আহত স্বামীর চিকিৎসার অর্থ যোগাতে স্বামীকে ভ্যানে নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন স্ত্রী সালেহা বেগম। সময় মত অপারেশন করা না হলে পা হারানোর শংঙ্কায় দিন পার করছেন তিনি।

শনিবার, ৫ ডিসেম্বর দুপুরে উপজেলার বন্দর বাসস্ট্যান্ডে দেখা মেলে তার।

ভ্যানে শুয়ে আছেন অসুস্থ্য স্বামী। ভ্যান চালাচ্ছেন এক কিশোর। আর সালেহা বেগম দোকানে দোকানে গিয়ে হাত পাতছেন টাকার জন্য। এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকায় খেয়ে না খেয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছে পুরো পরিবার।

আহত নজরুল ইসলাম উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের বাড়াই পাড়া গ্রামের মৃত ওসমান গনির ছেলে। বয়স ষাটের উপরে। পেশায় রাজমিস্ত্রীর লেবার। তিন মেয়েকে নিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস। দু মেয়েকে বিয়েও দিয়েছেন। ছেলে রবিউল স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঢাকায় থাকেন। খোজ রাখেন না পরিবারের।

অসুস্থ্য নজরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রায় দুই মাস আগে সকালে  বাড়ি থেকে বাই সাইকেলযোগে বের হন কাজের উদ্দেশ্যে। পথিমধ্যে উপজেলার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে পৌছালে লালমনিরহাট থেকে ছেড়ে আসা একটি দ্রুত গতির ট্রাক ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তিনি ছিটকে পড়ে যান এবং ডান পায়ে আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হন।

স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দ্বায়িত্বরত চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে দেড় মাস চিকিৎসার পর কোন উন্নতি না হলেও বাড়ি চলে আসেন।

তিনি জানান, যা টাকা ছিলো রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসা করতেই সব শেষ। এতে প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। ফলে বাধ্য হয়ে বাড়ী ফিরে আসেন। হাতে টাকা না থাকায় বন্ধ হয়ে যায় চিকিৎসা। এখন দুবেলা পেটের ভাত যোগাতে পথে নেমেছেন তিনি।

আহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সালেহা এসময় কান্না জড়িত কন্ঠে বলছিলেন, বাড়িতে ছোট ছোট তিনটা মেয়ে আছে। তার উপর প্রতিদিন ৩০০ টাকার ঔষুধ লাগে। স্বামীও অসুস্থ কোন কাজ করতে পারে না। এখন ঔষুধের টাকা আর নিজেদের দুবেলা খাবারের জন্য মানুষের কাছে হাত পাতা লাগে।

তিনি বলছিলেন, তার পায়ে রড ঢুকানো আছে সেই রড বের করতে হবে ও অপারেশন করতে হবে। না হলে তিনি আর সুস্থ হবেন না।

এসময় তিনি অবদমিত কান্না চেপে সমাজের সচেতন বিত্তবানদের তার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর বিনীত অনুরোধ জানান। বিস্তারিত জানতে ০১৭০৪-৫৪৯৪৫২ এই সেলফোন নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেন তিনি। এছাড়া এই প্রতিবেদকের সাথেও যোগাযোগ করা যেতে পারে।

জেএম/রাতদিন