পাটগ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব, নিষেধাজ্ঞায় বৃদ্ধাঙ্গুলি

সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ধরলা, সানিয়াজান ও তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। জনসাধারণের চলাচলে দুর্ভোগ ও ফসলী জমি রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পায়নি এলাকাবাসী।

অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে মন্ত্রিপরিষদের কড়া নির্দেশ থাকলেও তা মানছেন না একটি দুষ্ট চক্র। এ বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, ‘কেউ যদি বালুমহাল ইজারা নেয় তাহলে শর্তানুযায়ী বালু উত্তোলন করবে আর যদি কেউ আইন বিরোধী কাজ করে বা অননুমোদিত হয় তাহলে স্থানীয় প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা বা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করবে। এটা স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে জানান।’


সরেজমিনে উপজেলার ধরলা নদীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে ট্রলিতে বালু উত্তোলন করে যেন পরিবহণের প্রতিযোগিতা চলছে। বিভিন্ন নদী থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রলি বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ সব বালু বিশাল স্তুপ করে রাখা হয়েছে মহাসড়কের পাশে সহ পাটগ্রাম পৌরসভা, পাটগ্রাম ,বুড়িমারীসহ বিভিন্ন এলাকায় । এতে বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে পণ্যবাহী ট্রাক ও যান চলাচলে দুর্ঘটনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

উপজেলার সবচেয়ে বেশি বালু উত্তোলন ও পরিবহণ হচ্ছে পাটগ্রাম পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের সোহাগপুর, ১ নং ওয়ার্ডের রাবার ড্যাম এলাকা, বুড়িমারী ইউনিয়নের গুড়িয়াটারী, বাউরা ইউনিয়নের সানিয়াজান নদী ও দহগ্রাম ইউনিয়নের সর্দারপাড়া এলাকার তিস্তা নদী থেকে দিন- রাত একটানা চলছে বালু উত্তোলন।

দহগ্রাম ইউনিয়নের সর্দারপাড়া এলাকার একাধিক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে দলীয় ক্ষমতাসীন লোকজন জড়িত। তারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।’

চলাচলে ভোগান্তি প্রসংগে ট্রাক চালক এনামুল হক ও সুমন মিয়া বলেন,‘ লালমনিরহাট – বুড়িমারী স্থলবন্দর মহাসড়কের বুড়িমারী ইউনিয়নের ঘুন্টি , বেলতলী ও পৌরসভার কলেজপাড়া, মির্জারকোর্ট সহ বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়কের পাশে বালু স্তুপ করে রাখে বালু ব্যবসায়ীরা ও ট্রাকে বালু লোড করে । এতে করে যানজট সৃষ্টি হয়। আমাদের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ী চালাতে হচ্ছে। ,

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন নাহারের সাথে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কয়েকদিন ধরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর নদীর যে স্থান থেকে বালু উত্তোলন হচ্ছে, সেগুলোর নাম মেসেজ করে তাকে জানাতে বলেছেন।

এমএস/রাতদিন