পার্বতীপুরে চার মৃত ব্যক্তি কিনেছেন ১০ টাকার চাল!

দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হাবড়া ইউপির শওকত আলী ও কফুরন মারা গেছেন চার বছর আগে। কাছাকাছি সময়ে মৃত্যু হয়েছে ওই ইউপির শেরপুর এলাকার ইদ্রিস আলীর। আর কিছুদিন আগে মারা গেছেন ভবানীপুরের লুৎফর রহমান। এই চার ব্যক্তিই সম্প্রতি ১০ টাকা কেজির চাল কিনেছেন।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের জন্য চালু করা সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের তালিকায় আছে মৃত ওই চারজনের নাম। শুধু তাই নয়, তালিকা অনুযায়ী তারা ১০ টাকা কেজির চালও কিনেছেন।

মৃত্যুর পর চাল কেনার খবরে হতবাক হয়ে যান ওই চারজনের স্বজনরা। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চেয়ে ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তারা। এরপরই প্রকাশ্যে আসে চাল আত্মসাতের ঘটনা।

জানা গেছে, ওই ইউপির ডিলার ও ইউপি মেম্বারদের যোগসাজশে মৃত ব্যক্তিদের নামে ১০ টাকা কেজির চাল তুলে আত্মসাৎ করা হয়েছে। জড়িতরা শুধু মৃত ব্যক্তির নামে চাল তুলে থেমে থাকেনি। অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডও বিতরণ করেছেন। এমনকি তিন বছর ধরে তালিকাভুক্তদের বঞ্চিত করে ভুয়া নাম ব্যবহার করে চাল আত্মসাৎ করছেন তারা।

হাবড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান বলেন, আমার ইউপিতে এক হাজার ৪৮৬ জনকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ডিলার সমন্বয় না করায় সমস্যা হয়েছে। তালিকায় কিছু ভুল আছে। এগুলো সমন্বয় করা হবে।

পার্বতীপুর উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মো. দেলোয়ার হোসেন সরকার বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। এসব অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পার্বতীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মো. হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, মৃত ব্যক্তি কিংবা একজনের পরিবর্তে অন্য কেউ অথবা একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে তালিকাভুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। কেউ এ ধরনের অনিয়ম করলে তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

পার্বতীপুরের ইউএনও শাহনাজ মিথুন মুন্নী বলেন, ১০ টাকা কেজির চাল আত্মসাৎ ও বিতরণে অনিয়মের অভিযোগগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।

জেএম/রাতদিন