পীরগঞ্জে গভীর নলকুপ ঘিরে পুলিশের রহস্যময় ভুমিকা, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা

পীরগঞ্জে পুলিশের রহস্যজনক ভুমিকার কারণে দেড়’শ একর জমি অনাবাদী থাকার আশংকা দেখা দিয়েছে, আশংকা দেখা দিয়েছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের । উপজেলার বেহবতপুর গ্রামে একটি গভীর নলকুপের মালামাল উদ্ধারে পুলিশের এই রহস্যজনক ভুমিকার কারণে কৃষকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। থানা পুলিশকে ওই মালামাল উদ্ধারে ইউএনও নির্দেশ দিলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, ১৯৭৮ সালে বিএডিসি (সেচ) পীরগঞ্জের ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের বেহবতপুর গ্রামে সেলিমের জমিতে একটি গভীর নলকুপ স্থাপন করে। এরপর ১৯৯৯ সালে সেটি বেহবতপুরের সেলিম মিয়া ও আজিজুল ইসলামের কাছে শর্তসাপেক্ষে বিক্রি করা হয়। একই বছরে তারা নলকুপটির অর্ধেক মালিকানা একই গ্রামের শামছুল মিয়ার কাছে বিক্রি করে। ওই তিন মালিকের অধীনেই বেহবতপুর, পাইকড়, কাশিপুর গ্রামের দেড়শতাধিক একর জমিতে ইরি-বোরো চাষ হচ্ছিলো।

পরবর্তীতে ২০০৬ সালে শামছুল হক তার মালিকানা সেলিমের কাছে বিক্রি করলে ৪ ভাগের ৩ ভাগের মালিক হয় সেলিম। অপরদিকে আজিজুল মাত্র ৪ ভাগের ১ ভাগ মালিক।

নলকুপটি দিয়ে ওই দু’মালিক পালাক্রমে চুক্তি ভিত্তিতে সেচ কার্য পরিচালনা করে আসছিল। কিন্তু আজিজুল গত বছরের চুক্তির টাকা সেলিমকে না দিয়ে উল্টো পানি তোলার ২০ হর্স পাওয়ারের ২টি মোটর, ৩টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারসহ সেচ কাজে ব্যবহৃত যাবতীয় যন্ত্রাংশ খুলে বাড়ীতে নিয়ে যায়।

ফলে এবারের ইরি-বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে বেহবতপুরের কৃষক নজরুল ইসলাম ও লাল মিয়া বলেন, সেলিমের অধীনে পানি সেচের পালা আসলেই আজিজুল বিবাদ শুরু করে। এ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে একাধিকবার শালিশও হয়েছে। এবারে আবাদ নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছি।

সাবেক ইউপি সদস্য বাবু মিয়া বলেন, নলকুপটি সেলিমের জমিতে শুরু থেকেই স্থাপিত। সেলিম ৩ ভাগের মালিক হলেও আজিজুল তাকে গায়ের জোরে উৎখাত করতে চায়।

প্রসংগত, চলতি ইরি-বোরোতে সেচ কাজের জন্য নলকুপটির যন্ত্রাংশ উদ্ধারে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও ইউএনও টিএমএ মমিনের কাছে সেলিম লিখিত অভিযোগ করে। গত ১৫ জানুয়ারী ইউএনও সরকারী গভীর নলকুপের মালামাল উদ্ধারে পীরগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

পরে থানার ওসি ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জকে ব্যবস্থা নিতে বললে এক সপ্তাহেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। ইনচার্জ শাহীন মিয়া বলেন, ব্যাপারটি মীমাংসায় ওসি স্যার দু’পক্ষকে নিয়ে থানায় বসার কথা।

ইউএনও টিএমএ মমিন বলেন, অভিযোগ পেয়ে সরকারী মালামাল উদ্ধারে ওসিকে নির্দেশ দিয়েছি। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে যেকোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন এলাকাবাসী।

জেএম/রাতদিন