পীরগঞ্জে সড়কে নিহত সেই ৫ পরিবারে কান্না থামছে না

রংপুরের পীরগঞ্জের সেই পাঁচ পরিবারের কান্না যেন থামছে না। গত বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ওই পাঁচ পরিবারের সদস্যরা। স্বজনদের হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারগুলো। পরিবারগুলোকে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

জানা গেছে, পীরগঞ্জ উপজেলার শানেরহাট ইউনিয়নের ধল্লাকান্দি গ্রামের সিরাজুল ও আশরাফুল, খোলাহাটি গ্রামের সৈয়দ আলী। ওই তিন রিক্সাচালকসহ হরিরামপুর শাহাপুরের স্কুলছাত্রী লুহানা খাতুন (১৪) ও শওকাত আলী (১২) গত বৃহষ্পতিবার রাতে বড়দরগা বাসষ্ট্যান্ড থেকে সেবা ক্লাসিক পরিবহনে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

পরদিন শুক্রবার সকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার কুর্নি এলাকার ইচাইল এলাকায় তাদের বহনকারী বাসটি বিকল হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। এ সময় পিছন থেকে ট্রাক বাসটিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই ওই পাঁচ জন মারা যান। গতকাল শনিবার, ৫ ডিসেম্বর নিহতদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানাা গেছে, লুহানার বাবা লুলু মিয়া দুই বছর আগে মারা গেছেন। পরিবারের অভাব মেটাতে লুহানা ও তার বড় ভাই নুহানকে বাড়ীতে রেখে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরীতে যায় তার মা। লুহানা মাকে দেখার জন্য চাচাতো ভাই শওকাত আলীকে সাথে নিয়ে ঢাকায় যাবার পথে নিহত হয়। লুহানা সপ্তম এবং শওকাত পঞ্চম শেণ্রির শিক্ষার্থী ছিল। শওকাত তার বাবার একমাত্র ছেলে ছিল।

শওকাতকে হারিয়ে তার বৃদ্ধ বাবা ছোবহান বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন। লুহানার মা মেয়েকে হারিয়ে এখন অসহায়। অপরদিকে রি´াচালক সিরাজুলের মৃত্যুতে তার স্ত্রী রাজেনা দুই সন্তানকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। একই অবস্থা নিহত আশরাফুল ও সৈয়দ আলীর পরিবারে। পরিবারগুলোতে এখন শোকের মাতম চলছে। পাশাপাশি তাদের সংসার এখন কীভাবে চলবে সেটাও ভেবেও তারা এখন অস্থিও হয়ে পড়েছেন।

নিহতদের পরিবারকে শান্তনা ও সহায়তা দিতে স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজসেবকরা পাশে দাঁড়িয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যায় ইউএনও বিরোদা রানী রায় প্রতিটি পরিবারকে ১০ হাজার টাকা ও ৩০ কেজি করে চাল প্রদান করেন। সমাজসেবক জাহিদুল ইসলাম রুবেল ব্যক্তিগতভাবে ২৫ কেজি করে চাল ও ১ হাজার করে টাকা এবং শানেরহাট ইউপির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মন্টু ২ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান করেন।

এবি/রাতদিন