‘ফণী’ আসছে প্রচন্ড শক্তিতে, বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রমের সম্ভাবনা শুক্রবার

প্রচণ্ড শক্তি সঞ্চয় করে হ্যারিকেনের গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে ‘ফণী। এরপর তা উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। আগামী শুক্রবার, ৩ মে নাগাদ ভারতের ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে এটি। এরপর তা  উপকূল ছুঁয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশর ভূখণ্ড অতিক্রম করতে পারে শুক্রবার রাতে। বুধবার, ১ মে দুপুরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছে এ তথ্য। এ সময় সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। 

দক্ষিণ-পশ্চিম ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব  বঙ্গোপসাগর  এলাকায় অবস্থান করা ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে আজ বুধবার বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অথচ আগের দিন মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা ঘণ্টা্য় সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ১১০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।

দেশের প্রথম সারির একাধিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়টি আজ সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৭৫, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২২৫, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১৫০ ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। এটি আরো ঘণীভূত হয়ে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

অথচ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৩২৫, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৬০, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৫০  ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৩০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থা করছিল।

এর আগে সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বিশেষ বার্তায় বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আরো ঘনীভূত হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। সমুদ্র বন্দরসমূহকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকতে নামিয়ে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়ছে।

একই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

এদিকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাজশাহীতে। এ ছাড়া ছয়টি বিভাগীয় শহর ও দুটি বৃহত্তম জেলার তাপমাত্রা ঢাকায় সর্বোচ্চ ৩৫ দশমিক ৬, খুলনা ৩৭ দশমিক ৬, চট্টগ্রাম ৩১ দশমিক ৬, সিলেট ৩৩ দশমিক ২, বরিশাল ৩৭ দশমিক ৭, রংপুর ৩৫ দশমিক ৯ এবং কুমিল্লায় ৩৫ দশমিক ৭ ও ফরিদপুরে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্র রেকর্ড করা হয়েছে।  

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক এ কে রুহুল কুদ্দুস দুপুরে ব্রিফিংয়ে জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণী বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানবে কি না, তা নিশ্চিত নয়। ব্রিফিংয়ে আরো বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির গতিবিধি যেকোনো সময় পরিবর্তনও হতে পারে।

এইচএ/রাতদিন