বড়পুকুরিয়ায় কয়লা আত্মসাত মামলায় এমডিসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে পেরোয়ানা

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে কয়লা আত্মসাতের অভিযোগে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ৭ ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছে আদালত। ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা মূল্যের ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭.৯৯ মেট্রিক টন কয়লা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৮ সালে এ মামলা দায়ের করা হয়।

একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর দিনাজপুর সিনিয়র স্পেশাল জজ আজিজ আহমদ ভূঁঞা মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ বিষয়ে শুনানি শেষে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ প্রদান করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দিনাজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম আমিনুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, এই চাঞ্চল্যকর মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ বিষয়ে শুনানি শেষে বিচারক মামলার অভিযোগপত্রের তালিকাভুক্ত বড়পুকুরিয়ার সাবেক ৭ এমডিসহ ২৩ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ প্রদান করেছেন। এ ছাড়াও তদন্তে ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকায় তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন মোতাবেক ৫ কর্মকর্তাকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আদেশ প্রদান করেছেন।

অভিযোগপত্রের তালিকায় রয়েছেন বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি প্রকল্পের সাবেক ৭ জন এমডিসহ ২৩ জন আসামি। তারা হলেন সাবেক এমডি মো. মাহবুবুর রহমান, মো. আবদুল আজিজ খান, প্রকৌশলী খুরশিদ আলম, প্রকৌশলী কামরুজ্জামান, মো. আনিসুজ্জামান, প্রকৌশলী এসএম নুরুল আওরঙ্গজেব ও প্রকৌশলী হাবিব উদ্দীন আহমেদ।

এ ছাড়া সাবেক মহাব্যবস্থাপক (জিএম) শরিফুল আলম, আবুল কাশেম প্রধানিয়া, আবু তাহের মো. নুরুজ্জামান চৌধুরী, ব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান হাওলাদার, আরিফুর রহমান ও সৈয়দ ইমাম হাসান, উপ-ব্যবস্থাপক খলিলুর রহমান, মোর্শেদুজ্জামান, হাবিবুর রহমান, জাহিদুর রহমান, সহকারী ব্যবস্থাপক সতেন্ত্র নাথ বর্মণ, মনিরুজ্জামান, কোল হ্যান্ডেলিং ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপক সোহেবুর রহমান, উপ-মহাব্যবস্থাপক একেএম খাদেমুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক অশোক কুমার হাওলাদার ও উপ-মহাব্যবস্থাপক জোবায়ের আলী আসামি রয়েছেন।

মামলার এজাহারে ১৯ জন আসামি ছিল। তদন্তে ৯ জনের নাম যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি এজাহারনামীয় ৫ জনকে আসামি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।

চার্জশিটে যাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তারা হলেন ব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন সরকার, ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক একরামুল হক, সাবেক ব্যবস্থাপক আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী ও মহাব্যবস্থাপক গোপাল চন্দ্র সাহা।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০০৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ৯২ মেট্রিক টন কয়লা চুরি হয় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে। যার আনুমানিক মূল্য ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার ৫০১ টাকা ৮৪ পয়সা। এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয় এবং কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়।

কয়লা গায়েবের ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনিসুর রহমান বাদী হয়ে গত বছর ২৪ জুলাই ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে পার্বতীপুর থানায় মামলা করেন। মামলাটি দুদকের তফশিলভুক্ত হওয়ায় দুদক কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়।

পরে মামলাটি দুদকের উপ-পরিচালক সামসুল আলম তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে তদন্ত করেন। গত ২৪ জুলাই মামলাটির অভিযোগপত্র আদালতে প্রদান করা হয়।

জেএম/রাতদিন