বুড়িমারী হত্যাকান্ড: নতুন করে আরও ৬ জনসহ মোট গ্রেপ্তার ১৬

রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক লাইব্রেরিয়ান মো. সহিদুন্নবী জুয়েলকে (৫০) পিটিয়ে-পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আরও ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট ১৬ জন গ্রেপ্তার হলেন।

মঙ্গলবার, ৩নভেম্বর বেলা ১২টার দিকে পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন্ত কুমার মোহন্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সোমবার, ২ নভেম্বর দিবাগত মধ্যেরাতে বিভিন্নস্থান থেকে এজাহারভুক্ত এসব আসামীদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে গত রোববার ১ নভেম্বর প্রথম ধাপে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পরদিন খাদেম জোবেদ আলীসহ (৬১) আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের লালমনিরহাট জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

প্রথম দফায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ওই এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে আশরাফুল আলম (২২) ও বায়েজিদ (২৪), ইউসুব আলী ওরফে অলি হোসেনের ছেলে রফিক(২০), আবুল হাসেমের ছেলে মাসুম আলী(৩৫) এবং সামছিজুল হকের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫)। এই ৫ আসামিকে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

দ্বিতীয় ধাপের গ্রেপ্তার ৫ খাদেম জোবেদ আলী, রাজু (১৯), আনোয়ার হোসেন (৫৫), মানিক (২৬) ও মেরাজুল ইসলাম (১৭)। সন্ধ্যায় তাদের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌসী বেগমের আদালতে (আমলি আদালত-৩) হাজির করা হলে বিচারক তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আর আসামি মেরাজুল অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

প্রসংগত, গত বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর বিকেলে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে শহিদুন্নবী জুয়েলকে হত্যার দায়ে নিহতের চাচাত ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার, ৩১ অক্টোবর একটি মামলা দায়ের করেন।

ঘটনাটি তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুক্রবার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট টি.এম.এ মমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের চাচাত ভাই সাইফুল আলম, পাটগ্রাম থানার এসআই শাহজাহান আলী ও বুড়িমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছেন।

ঘটনাস্থল তদন্ত করে মসজিদের কোরআন অবমাননার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানবধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত দলের পরিচালক আল মাহমুদ ফাউজুল কবির। এটা স্রেফ একটি গুজব বলে দাবি করা হয়েছে।

তাছাড়াও হত্যার পেছনে ধর্ম অবমাননার কোনো প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান।

জেএম/রাতদিন