বুড়িমারী হত্যাকান্ড: উপজেলা চেয়ারম্যানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি

আবু ইউনুছ মো. সহিদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, বুড়িমারী ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের বিরদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণসহ চার দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।

আজ শনিবার, ২১ নভেম্বর রংপুর নগরীর শালবন এলাকায় জুয়েলের বাড়ি ‘নবী ভিলা’য় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। এলাকাবাসীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী।

সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী অভিযোগ করেন, ‘ঘটনার দিন বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদে পাটগ্রামের ইউএনও, ওসি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা উপস্থিত থেকেও হামলাকারীদের নিবৃত্ত করতে পারেনি। উপরন্ত ওই সময় উপজেলা চেয়ারম্যানের উস্কানিমূলক বক্তব্য পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত করেছিল। ইউপি সদস্য হাফিজুল ইসলাম মসজিদ থেকে জুয়েলকে মারপিট করে টেনে হিচড়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি’।

সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী বলেন, ‘কোরআন অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে জুয়েলকে পিটিয়ে মেরেই ক্ষান্ত হয়নি পাষন্ডরা, তার মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলেছে। প্রকাশ্যে সংঘটিত এই হত্যাকান্ডে হাজার হাজার মানুষ অংশ নিয়েছে। হামলাকারীরা উল্লাস করেছে, মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেছে। সভ্য সমাজে এরকম ঘটনা বিস্ময়কর, অভাবনীয় ও গভীর উদ্বেগজনক’।

সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্ত্রী জেসমিন আক্তার মুক্তাকে সরকারি চাকুরীতে নিয়োগ, জুয়েলের যেসব হত্যাকারী এখনো গ্রেপ্তার হয়নি তাদের গ্রেপ্তার, দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে বিচার এবং ন্যায় বিচারের স্বার্থে জুয়েল হত্যার মামলাটি রংপুরে হস্তান্তরের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জুয়েলের স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে, বোন-ভাইসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৯ অক্টোবর বুড়িমারী কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ থেকে সৃষ্ট গুজবে জুয়েলকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পাটগ্রাম থানায় দায়ের পৃথক তিনটি মামলায় এ পর্যন্ত ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ওই মসজিদের খাদেম জোবেদ আলীসহ চারজন ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

এবি/রাতদিন