ভিক্ষুকের জমিতে আ.লীগ নেতার চোখ, জাল দলিলের পর ১৪৪ ধারা ভঙ্গ!

রাবেয়া খাতুনের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের পীরেরহাট এলাকায়। ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন চালালেও কয়েক শতাংশ জমি আছে তার। শত কষ্টেও সেই জমি তিনি হাতছাড়া করেননি। অথচ সেখান থেকেই ১০ শতাংশ জমি জাল দলিলের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা।

জানা গেছে, অন্য এক নারীকে রাবেয়া সাজিয়ে তার স্বাক্ষরে সুরুজ আলী নামের ওই আ.লীগ নেতা ১০ শতাংশ জমি নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। অথচ রাবেয়া কোনো দিন সাব-রেজিস্ট্রি অফিস যাননি এমনকি তিনি স্বাক্ষরও জানেন না।

বেশ কয়েকদিন আগে ওই জমি নিজের নামে লিখে নেওয়ার পর সুরুজ আলী নামের ওই নেতা বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ওই জমির উপর জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেছেন। তিনি ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে সেখানে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেছেন। তবে এ ঘটনায় জারজীজ আহমেদ বাবলু নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, সুরুজ আলী চৈত্রকোল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারণ  সম্পাদক ।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিধবা রাবেয়া খাতুনের​ জমির উপর চোখ পড়ে সুরুজ আলীর। একপর্যায়ে সুরুজ তার সেহযোগীদের নিয়ে কিছুদিন আগে ওই জমি থেকে জাল দলিলের মাধ্যমে ১০ শতক জমি নিজের মানে লিখে নেন সুরুজ। এরপর ওই জমিতে পাকাঘর তৈরীর কাজ শুরু করেন।

এতে বাধা দেয়ায় ভিখারীনি রাবেয়াকে ওই আ.লীগ নেতার নেতৃত্বে মারপিট করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে মারপিট ও ভুয়া দলিল বাতিলে পৃথক মামলা করেন রাবেয়া। গত বুধবার, ৩ জুলাই আদালত ওই জমির উপর ১৪৪ ধারা জারির নির্দেশ দেন।

ফলে আজ বৃহস্পতিবার পুলিশ ১৪৪ জারি করলেও পুলিশকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ওই আ’লীগ নেতা অর্ধশতাধিক শ্রমিক দিয়ে​ নির্মাণ কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। পরে পুলিশ খবর পেয়ে সেখান থেকে জারজীজ আহমেদ বাবলুকে আটক করে।

রাবেয়া খাতুন বলেন,  ‘মুই এস্ট্রি (সাব-রেজিস্ট্রি) অফিস দেখংনাই। জমির দলিলও করি দেও নাই। মোর জমিটা ফিরি দেও বাবা।’

পীরগঞ্জ থানার ওসি সরেস চন্দ্র বলেন, ‘জারজীজ আহমেদ বাবলু নামের একজনকে আটকের পর মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

এইচএ/রাতদিন