রংপুরের রেজিয়া হারিয়েছেন প্রাণ, বিচার দেখে যেতে চেয়েছিলেন বাবা

রেজিয়া বেগম। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার গঙ্গানারায়ন গ্রামের আফাজ উদ্দিনের মেয়ে । ১৯৯০ সালে কাজের সন্ধানে ঢাকায় পাড়ি জমান রাজিয়া। রাজধানীতে ভারতীয় ভিসা অফিসে আবেদন ফরমে ছবি লাগানোর কাজ করতেন। এসময় তার সাথে পরিচয় হয় মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী আয়শা মোকারমের সঙ্গে।

তার হাত ধরে রেজিনা বেগমও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বিভিন্ন সমাবেশ ও মিছিলে সক্রিয় ছিলেন তিনি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে  রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী শান্তিপূর্ণ সমাবেশে যোগদানের উদ্দেশ্যে আয়শা মোকাররমের নেতৃত্বে একটি মিছিলে রেজিয়াও ছিলেন। পরে তিনিও সমাবেশে যোগ দেন। কিন্তু সমাবেশ শেষে মিছিল বের হবার আগমুহূর্তে দুর্বৃত্তদের ছোড়া গ্রেনেডের আঘাতে সভাস্থলেই নিহত হন রেজিয়া বেগম।

গ্রেনেড বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কানের শ্রবণশক্তি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গ্রেনেড হামলায় রেজিয়াসহ ২৩ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর আহত অবস্থায় আইভি রহমান সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করে ২৪ আগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে শয্যাশয়ী ছিলেন আওয়ামী লীগ কর্মী রেজিয়া বেগমের বাবা আফাজ উদ্দিন। তিনি মৃত্যুশয্যায় কাতর থাকলেও তার আগেই গ্রেনেড হামলায় নিহত হন রেজিয়া বেগম। এর কিছু দিন পর বাবা মারা যান।

পারিবারিক সূত্র জানায়, ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় মেয়েসহ অন্যরা নিহতের বিচার দেখে যেতে চেয়েছিলেন আফাজ উদ্দিন।

রেজিয়ার স্বজনরা জানায়, গ্রেনেড হামলায় নিহত হওয়ার পর ওই বছরেই রেজিয়ার পরিবারকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ও ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৮ লাখ টাকা দেওয়া হয়।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, ‘ রেজিয়ার পরিবার যেন সরকারি সুযোগ-সুবিধা পায় আমি সেই চেষ্টা করব।’

এইচএ/রাতদিন