রংপুরে দুর্ঘটনারোধে নির্মিত ১১ ‘ব্লাকস্পটেই’ প্রাণ যাচ্ছে মানুষের!

রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের তারাগঞ্জ থেকে পীরগঞ্জ পর্যন্ত রংপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) আওতায় রয়েছে ১১টি ‘ব্লাকস্পট’। মহাসড়কের চিহ্নিত জায়গাগুলোতে এগুলো নির্মিত করা হয়েছিল দুর্ঘটনারোধে। কিন্তু এই ব্লাকস্পটগুলোই এখন যেন হয়ে উঠেছে মরণফাঁদ। গত কয়েক বছরে ব্লাকস্পটগুলোতোই ঘটা সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত অর্ধশত মানুষ প্রান হারিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ সকালের দিকেও রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে নির্মিত একটি ব্লাকস্পটে বাস-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন তিন বাসযাত্রী।

সওজ সুত্র জানায়, ২০১১ সালের ১৩ আগষ্ট মানিকগঞ্জের শিবালয়ের সিনেমার স্যুটিংস্পট থেকে ফেরার সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিশুক মুনীরসহ কয়েকজন। এ দুর্ঘটনার পর সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর কৌশল বের করতে বুয়েটের একটি দল সারাদেশে গবেষণা করে ১৪৪ টি স্থানকে দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে। পরে ‘ব্লাকস্পট রিমুভ প্রজেক্ট’ এর আওতায় রংপুর জেলায় ১১টি দুর্ঘটনারোধে ‘ব্লাকস্পট ’ নির্মাণ করা হয়।

অথচ স্পটগুলোতেই গত কয়েক বছরে অর্ধশতাধিক দুর্ঘটনা ঘটে।

সওজ সূত্র জানায়, রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, রংপুর সদর ও তারাগঞ্জ উপজেলার ১১ ব্লাকস্পটকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ওই স্থানগুলোতে হাট-বাজার, বেসরকারি ও সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা কেন্দ্র থাকার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। এগুলো হচ্ছে পীরগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ড, লালদিঘী, বড়দরগা, শঠিবাড়ী, মিঠাপুকুর, দমদমা, রংপুর মডার্ন মোড়, রংপুর মেডিকেল মোড়, তারাগঞ্জ, ইকরচালি ও চিকলী।

জানা গেছে, বছর পাঁচেক আগে ওই ব্লাকস্পটগুলোতে মহাসড়কের উভয়পার্শ্বে সম্প্রসারণ ও সড়কে ডিভাইডার নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় হয়েছিল প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই ব্লাকস্পটগুলোই এখন মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝেমধ্যেই যানবাহন ডিভাইডারের উপর উঠে যাচ্ছে কিংবা ধাক্কা লাগছে। এতে ঘটনাস্থলেই অনেকেই প্রাণ হারাচ্ছেন বা পঙ্গুত্ব বরণ করছেন।

রংপুর সওজ’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম খান বলেন, ‘ব্লাকস্পটগুলোতে ইদানিং দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে। যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রনে সড়কে র‌্যাম্পবেল স্ট্রিপ, গতি নিয়ন্ত্রন করুন, বামে বা ডানে চলুন এমন সাংকেতিক চিহ্ন সম্বলিত সাইনবোর্ড দেয়া আছে তবুও দুর্ঘটনা হচ্ছে। চালকের অসাবধানতার কারণেই এমনটি হচ্ছে।’

এসকে/রাতদিন