রংপুর হবে অত্যাধুনিক সিটি, ২৬০ কোটি টাকার কাজ চলমান

রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার একেএম তরিকুল ইসলাম সিটি করপোরেশন ও প্রশাসনের সমন্বয়ে রংপুরকে একটি অত্যাধুনিক সিটি কর্পোরেশন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

সোমবার, ২ ডিসেম্বর রংপুর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন নগরী শীর্ষক নাগরিক সংলাপে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

আয়োজিত সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার একেএম তরিকুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আব্দুল আলীম মাহমুদ, জেলা প্রশাসক মো. আসিব আহসান।

এসময় আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবি, জাসদ নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় প্রিন্ট, অললাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রেসক্লাব সভাপতি রশিদ বাবু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন,  রংপুরের সিভিল সার্জন হিরম্বয় কুমার রায়, মানবাধিকার ও পরিবেশ আন্দোলন-মাপা’র প্রধান নির্বাহী অ্যাড. এএএম মুনীর চৌধুরী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি মোশফেকা রাজ্জাক, আকবর হোসেন ও আশরাফুল আল আমিন।

রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, মহানগর জাসদের সভাপতি গৌতম রায়, ওয়ার্কাস পার্টির মাজিরুল ইসলাম লিটন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

এছাড়াও সংলাপে অংশ নেন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সরকার, যুগের আলো’র বার্তা সম্পাদক আবু তালেব, দৈনিক পরিবেশের সম্পাদক একেএম ফজলুল হক, দৈনিক আমাদের প্রতিদিনের সম্পাদক মাহবুব রহমান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বিপ্লব প্রসাদ, কবি ও উন্নয়ন কর্মী আশাফা সেলিম, শিক্ষক নেতা আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া, ডাঃ মফিজুল ইসলাম মান্টু, কমরেড শাহাদাত হোসেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক রফিক সরকার ও সিদ্দিক হোসেন।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কেএম তারিকুল ইসলাম বলেন, রংপুর নগরীকে পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে আধুনিক চিন্তার প্রয়োগ ঘটাতে হবে। এর জন্য বিভিন্ন মহলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে সিটি কর্পোরেশন, প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগকেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। নিজ নিজ অবস্থান থেকে সকলে সচেতন হয়ে সম্মিলিতভাবে নগরের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, নগরের উন্নয়নে সকলকে দপ্তরগুলোকে সহযোগিতা করতে হবে। সকলের আধুনিক চিন্তা মৌখিক অথবা লিখিতভাবে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে দিতে পারে নগরবাসী। নগরীতে পর্যাপ্ত খেলারমাঠ, ডে কেয়ার সেন্টার, বয়স্কদের পূর্ণবাসন কেন্দ্র, পশু জবাই করার আধুনিক ব্যবস্থা, নাইট মার্কেট, হলিডে মার্কেটের ব্যবস্থা করতে হবে। শোভাবর্ধনের পাশাপাশি নগরের সড়কের নামকরণ করে দেশে আত্মত্যাগীদের স্মরনীয় করতে উদ্যোগ নেয়া জরুরী। রংপুরের ঐতিহ্য শ্যামা সুন্দরী খাল পুনরুদ্ধার, শোভাবর্ধনের জন্য কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে।

প্রসংগত, ২০৫ দশমিক ৭০ বর্গ কিলোমিটার নিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশনের যাত্রা শুরু হয় ১০১২ সালের ২৮ জুন। এর আগে ১৮৬৯ সালে ৫ মে মাসে ৫২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের রংপুর পৌরসভা গঠিত হয়েছিল। আরো আগে ১৭৭২ সালে রংপুর শহরের জন্ম হয়েছিল। সেসময় এ জেলার কালেক্টর ছিলেন চার্লস পালিং।

রংপুর সিটি করপোরেশন গঠিত হবার পর এই সিটিতে নেই সুপরিকল্পিত খেলার মাঠ, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাস স্থান পর্যাপ্ত প্রশস্ত রাস্তা, ট্রাফিক ব্যবস্থা। যতটুকু হয়েছে তা অপরিকল্পিতভাবে। এর প্রেক্ষিত সুপরিকল্পিত সিটি করপোরেশন বা স্মাটর্ সিটি গড়ে তুলতে নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

নাগরিক সংলাপে নগরীতে যানজট, দুষণ, জলাবদ্ধতা, ট্রাফিক, পরিবহন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দেখা দেয় সংকট। এই সংকট নিরসনে সুপরিকল্পিত নগরায়নে বিভিন্ন  প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবনাগুলো আমলে নিয়ে সিটি করপোরেশ ও প্রশাসনের সমন্বয়ে নগর উন্নয়নের পরিকল্পনা শুরুর আশ্বাস দেওয়া হয়।

সংলাপের প্রধান আলোচক সিটি মেয়র বলেন, রংপুর নগরীর ৩১ স্থান দিয়ে অবধৈ ভাবে অটোরিস্কা নগরীতে প্রবেশ করায় নগরীর বিভিন্ন সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।

নগর পুলিশে প্রধানের সহযোগীতা চেয়ে মেয়র বলেন, রংপুরের ট্রাফিক ব্যবস্থার আরো উন্নতি করতে হবে। অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। জনপ্রতিনিধারা ইচ্ছা করলে সকল কাজ করতে পারে না।

তিনি জানান, রংপুরকে একটি সুন্দর নগরী উপহার দেওয়ার জন্য ২৬০ কোটি টাকার কাজ চলমান আছে। আরো শত কোটি টাকার কাজ অচিরে শুরু হবে।

নগরীর ভাঙ্গা চোরা রাস্তা ঘাট আগামী ৬ মাসের মধ্যে সংস্কার করা হবে। এসময় রংপুর নগরীর উন্নয়নের জন্য সকল রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের সহযোগীতা কামনা করেন তিনি।

এনএইচ/রাতদিন