রাশিয়ার টিকার অনুমোদন দিল ইরান

রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন স্পুটনিক-৫ অনুমোদন দিয়েছে উপসাগরীয় অঞ্চলের মিত্র দেশ ইরান। মঙ্গলবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ দেশে এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার ভ্যাকসিনের ইরানে অনুমোদন মস্কোর জন্য এক ধরনের বিজয় হিসেবে দেখছেন পর্যবেক্ষকরা। মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে লড়ছে ইরান। দেশটি বলছে, তারা দেশীয় ভ্যাকসিন উৎপাদনে কাজ শুরু করেছে। তবে তার আগে পর্যন্ত শুধুমাত্র রাশিয়া, ভারত অথবা চীনের ভ্যাকসিনের ওপর নির্ভর করবে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠকের পর স্পুটনিক-৫ এর অনুমোদন সোমবার দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জারিফ। তিনি বলেছেন, অদূর ভবিষ্যতে আমরা এই ভ্যাকসিন কিনতে পারবো বলে আশা করছি। একই সঙ্গে যৌথ উৎপাদনও করতে পারবো।

চলতি মাসে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনের ভ্যাকসিনের ওপর পুরোপুরি আস্থা রাখা যায় না উল্লেখ করে দেশটিতে এ দুই দেশের ভ্যাকসিন নিষিদ্ধ করেন। এর আগে ইরান বলেছিল, রাশিয়ার ভ্যাকসিনের অনুমোদন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) না দেয়া পর্যন্ত কেনার জন্য অপেক্ষা করবে তেহরান।

শেষ ধাপের পরীক্ষা শুরুর আগেই গত বছরের আগস্টে রাশিয়া করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন স্পুটনিক-৫ এর অনুমোদন দেয়। সোভিয়েত আমলে মহাকাশে পাঠানো যানের নামে এই ভ্যাকসিনের নাম করে রাশিয়া। পরীক্ষা শেষ না হতেই অনুমোদন দেয়ায় অনেক বিশেষজ্ঞ এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ও সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

করোনার উত্থান এবং বৈশ্বিক মহামারি

• ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়
• চীনে করোনায় প্রথম প্রাণহানি ঘটে ৯ জানুয়ারি
• ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে
• এই ভাইরাসে বিশ্বে প্রথম প্রাণহানি ঘটে ২ জানুয়ারি ফিলিপাইনে
• ১১ মার্চ ‌‘করোনা মহামারি’ ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

পরে উদ্ভাবক কোম্পানি রাশিয়ার গামালিয়া ইনস্টিটিউট ভ্যাকসিনটি ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকর বলে ঘোষণা দেয়। রাশিয়ার বাইরে আর্জেন্টিনাসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ শুরু করেছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাসে রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ লাখ ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ এবং মৃত্যু ছাড়িয়েছে ৭০ হাজার। করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ কোটি ৩৯ লাখ ছাড়িয়েছে এবং প্রাণ গেছে ২১ লাখ ২২ হাজারের বেশি।

সূত্র: রয়টার্স।

এনএ/রাতদিন

মতামত দিন