বিশ্ববিদ্যালয়ে অনন্য ভালোবাসা দিবস, সীমা না ছাড়িয়ে ৫ দশকে

চকলেট। কেক-পেস্ট্রি। সন্দেশ। ফলমূল। আলাদা আলাদা ট্রে-তে সাজানো। একদল উচ্ছল মেয়ে এগুলো নিয়ে হেটে গেলে নিশ্চয় ভাববেন কারো গায়ে হলুদের ‘তত্ত্ব‘ নিয়ে হয়তো যাচ্ছে তারা। আপনি ঠিকই ভাবছেন। এই মেয়েরা ত্তত্ব নিয়েই যাচ্ছে।

ছবি : সংগৃহীত

আবার ছেলেদের হাতে হাতেও ট্রে। সেগুলোতেও সাজানো নানান জিনিস। তারাও নিয়ে যাচ্ছে তত্ত্ব। দুই পক্ষের সাথেই থাকে ঢাক।

তবে তা গায়ে হলুদের তত্ত্ব নয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ছাত্রছাত্রীরা বার্ষিক প্রেম-পার্বণ পালনের জন্য এই তত্ত্ব নিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন এমনটাই চলে আসছে সেখানে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের এটাই বর্ধমানী রীতি। গোটা রাজ্যের মধ্যে একমাত্র এই ক্যাম্পাসই এভাবে ‘প্রেমদিবস’ উদযাপন করা হয়।

ছবি : সংগৃহীত

সেজেগুজে তত্ত্ব নিয়ে প্রথমে মেয়েরা যায় ছেলেদের হোস্টেলে। পরে আবার ছেলেরাও যায় মেয়েদের হোস্টেলে। শিক্ষার্থীদের এই দিনটাতে কোনও হোস্টেলে ঢুকতে বাধা নেই। নেই চোখরাঙানি ৷ তত্ত্ব নিয়ে সোজা ঢুকে যাওয়া যায় সেখানে ৷ তার আগে ফুল ছিটিয়ে একে-অপরকে বরণ করে নেয়া হয়।

প্রথম তত্ত্ব যাবে মেয়েদের হোস্টেলে। পরে মেয়েরা নিয়ে যাবে ছেলেদের হোস্টেলে ৷এরপর কুশল বিনিময়, আড্ডা উপহার আদান-প্রদান, খাওয়া-দাওয়া। দিনটিকে ঘিরে হোস্টেলগুলো সাজানো হয় বর্ণিল সাজে।

আড্ডার এক ফাঁকে পছন্দের মানুষটির সঙ্গে একান্তে আলাপচারিতা। এমন কী চাইলে সেরে ফেলা যায় ছোটখাটো একটা মালাবদলও! তবে তাকে আবার বিয়ে ভেবে বসবেন না। এ নেহাতই একটা মজা ৷সেখানে ছাত্রছাত্রীরা পরস্পরের মন রাঙিয়ে আরও একটু কাছে আসার চেষ্টা করেন ৷ কিন্তু তা কখনই সীমা ছাড়ায় না।

ছবি : সংগৃহীত

প্রতি বছর ভ্যালেন্টাইনস ডে ও বসন্ত উৎসবের ঠিক আগে আগে উদযাপিত হয় সরস্বতী পূজা। আর পূজার পরদিন এ বিশেষ দিবস। সেখানকার শিক্ষার্থীরা মূলত এ দিনটিকেই ভ্যালেন্টাইনস ডে হিসেবে পালন করে থাকে।

কী ভাবে এই অভিনব ভালোবাসার দিনের সূত্রপাত ?

সে কথা অবশ্য আজ আর কেউই জানেন না৷ শুধু জানেন, বহু যুগ ধরে চলে আসছে । সম্ভবত সত্তরের দশক থেকে ৷ ‘চাইছি তোমার বন্ধুতা’ এই বার্তা নিয়েই দশকের পর দশক ধরে চলেছে এই বিশেষ রীতি।

কিন্তু মজা করে এই যে প্রেম জানানো আর ভুয়ো মালাবদল, এতে কখনও কি ভুল বোঝাবুঝি হয় না? পড়ুয়ারা জানালেন, ভুয়ো মালাবদল থেকে সত্যি মালাবদলে পৌঁছনোর সংখ্যাটা নেহায়েত কম নয়৷

ছবি : সংগৃহীত

শিক্ষার্থীরা জানান, একে অপরকে তত্ত্বপ্রদানের মাধ্যমে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা এবং একতাবোধকে আরও সুদৃঢ় করার লক্ষ্য নিয়েই এই রেওয়াজ চলে আসছে। ভ্যালেণ্টাইন্স ডে নয়, সকলের মধ্যে একটা সুস্থ ভাল সম্পর্ক তৈরী করাই এই রীতির মূল লক্ষ্য। সুত্র: এবেলা/কলকাতা২৪

আরআই/রাতদিন