সব ধরনের রেনিটিডিন স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ

সাময়িক নিষেধাজ্ঞার পর এবার সব ধরনের রেনিটিডিন স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার এ নির্দেশ জারি করেছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। ফলে রেনিটিডিন জাতীয় কোনো ওষুধ উৎপাদন, বিক্রি, বিতরণ ও রপ্তানি বন্ধ হচ্ছে। এছাড়া বাজার থেকে রেনিটিডিন আগামী ১০ দিনের মধ্যে তুলে নেয়ার নির্দেশও আসছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, ভারতীয় দুটি কোম্পানির কাঁচামাল দিয়ে বাংলাদেশে রেনিটিডিন জাতীয় ওষুধ তৈরি হয়। এসব রেনিটিডিন ও কাঁচামালে ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গেছে। তাই ভারতীয় দুই কোম্পানি ছাড়াও দেশীয় সব কোম্পানির রেনিটিডিন জাতীয় ওষুধ নিষিদ্ধ করা হলো। এসব ওধুষ আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাজার থেকে তুলে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভারতের মেসার্স সারাকা ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড ও মেসার্স এসএমএস লাইফসায়েন্সের আমদানি করা কাঁচামালে শরীরের জন্য গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে অনেক বেশিমাত্রায় ক্ষতিকর এন-নিট্রোসডিমিথাইলামাইন (এনডিএমএ) পাওয়া যায়। পরে রেনিটিডিন হাইড্রোক্লোরাইড কাঁচামাল (এপিআই) এবং ওই কাঁচামাল দিয়ে উৎপাদিত রেনিটিডিনের নমুনা পরীক্ষার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত সিঙ্গাপুরের পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। সেখানেও পরীক্ষাকৃত কাঁচামাল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান এনডিএমএ অধিম মাত্রায় থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফলে জনস্বার্থে রেনিটিডিন জাতীয় সব ওষুধ উৎপাদন, বিক্রি, বিতরণ ও রপ্তানি স্থগিত করা হয়। 

অ্যাসিডিটির কারণে দেশের মানুষ পিপিআই (প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর) গোত্রের ওমিপ্রাজল, রেবিপ্রাজল, ইসোমিপ্রাজল, প্যান্টোপ্রাজল, ল্যানসোপ্রাজল জাতীয় ওষুধ সেবন করে আসছে। দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বহুল ব্যবহৃত এসব ওষুধ এবার স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা হলো।

এর আগে চলতি বছরের গত ২৯ সেপ্টেম্বর দেশের ৩১টি ওষুধ কোম্পানির রেনিটিডিন ওষুধের কাঁচামাল আমদানি, উৎপাদন ও দেশের বাজারে বিক্রির ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলো ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

উল্লেখ্য, গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসায় রেনিটিডিন সেবনের ব্যাপারে সতর্কতা জারি করে গত ১৩ সেপ্টেম্বর মার্কিন ফুড ও ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) জানায়, এ ট্যাবলেটে পরিবেশ স্বল্পমাত্রায় পরিবেশ দূষণকারী হিসেবে পরিচিত এনডিএমএ’র উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যা মানব শরীরে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। পরিবেশ দূষণকারী এ উপাদান পানি ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যেও পাওয়া যায়।

এনএ/রাতদিন