সুন্দরবনের জন্য বেঁচে গেল বাংলাদেশ

অতি প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় `বুলবুল’ বঙ্গোপসাগর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ঘূর্ণিঝড়ের একপাশে ছিল পশ্চিমবঙ্গ, আর সুন্দরবন ছিল তিন পাশে। যার কারণে সুন্দরবন অতিক্রম করতে ঘূর্ণিঝড়ের দীর্ঘসময়। আর ঘূর্ণিঝড় `বুলবুল’ গতি কমে আসে। ফলে পূর্ণ শক্তি নিয়ে বুলবুল বাংলাদেশের স্থলভাগে আঘাত করতে পারেনি। সুন্দরবনের জন্য বলা যায় বেঁচে যায় বাংলাদেশ।

রোববার, ১০ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার পর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত আবহাওয়া অধিদফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান।

তিনি বলেন, ‘এটা ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে নাই। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের একপাশে পশ্চিমবঙ্গ ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের তিনদিক জুড়েই ছিল সুন্দরবন।’

বুলবুলের গতি কমার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বুলবুল যে গতিতে আসার কথা ছিল, সেই গতিতে আসেনি। যখন ঘূর্ণিঝড় জলভাগের ওপর দিয়ে চলে, সেই জলভাগ ঘূর্ণিঝড়ের ওপর তেমন শক্তি প্রয়োগ করতে পারে না। কিন্তু স্থলভাগে গাছ, স্থাপনা দাঁড়ানো থাকে। এগুলোর সঙ্গে সবসময় সংঘর্ষে লিপ্ত হয় ঘূর্ণিঝড়, বাধা প্রাপ্ত হয়; এ কারণে ওর মধ্যে রিটার্নিং ফোর্সের (বিরোধী শক্তি) কারণে গতি আস্তে আস্তে কমে যায়।’

তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের তিন দিকেই সুন্দরবন জুড়ে ছিল। যেহেতু ঘূর্ণিঝড় উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল, সুন্দরবনের কারণে তার অবস্থানের পরিবর্তন কমে এসেছে। ঘূর্ণিঝড়ের নিজস্ব শক্তিও কমে আসে। এ কারণে উপকূল অতিক্রম করতে গিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের দীর্ঘক্ষণ সময় লেগেছে।’

বরিশাল অংশ দিয়ে বুলবুল প্রবেশ করলে এর গতি ১১৫ থেকে ১২০ কিলোমিটার বা তার চেয়ে বেশি গতিতে দ্রুত স্থলভাগে প্রবেশ করত বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ।

আব্দুল মান্নান জানান, সুন্দরবনের কারণেই ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হয়েছে। তবে এখনও মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর মহা বিপৎসংকেত বহাল রয়েছে।

অধিদফতর জানিয়েছে, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহা বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে ৯ নম্বর মহা বিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। এদিকে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।