স্বজনদের নেই পাসপোর্ট, ভারতের মর্গে পড়ে আছে ঠাকুরগাঁওয়ের আরশাদের মরদেহ

বাংলাদেশ থেকে  চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে মারা যাওয়া এক বৃদ্ধের মরদেহ পড়ে আছে দেশটির এক হাসপাতালে। পরিবারের কারো পাসপোর্ট না থাকায় ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না মরদেহটি। আরশাদ আলী (৬৩)নামের ওই ব্যক্তির বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ইলুয়াটুলিতে।

গত সোমবার, ২৭ জানুয়ারি রাতে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয় বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।

আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, বালিয়াডাঙ্গীর আরশাদের ফুপাতো ভাই সাহেব আলীর বাড়ি ভারতের করণদিঘি থানার আলতাপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের জিনাইকুড়ায়। সেখানেই এসেছিলেন আরশাদ। সোমবার বিকেলে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়লে আরশাদকে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজরা।পরে রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।গত মঙ্গলবার হাসপাতালের মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়।

রায়গঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

জানা গেছে, আরশাদ আলীর পরিবারের কোনও সদস্যের পাসপোর্ট না থাকায় তাঁরা ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পেয়েও এ দেশে আসতে পারেননি। সেই কারণে তাঁরা দেহ বাংলাদেশের বাড়িতে নিয়ে যেতে পারছেন না।

পুলিশ জানিয়েছে, আরশাদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। তার পৈতৃক বাড়ি করণদিঘি থানার আলতাপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জিনাইকুড়ায়।পরবর্তিতে তিনি পরিবারের কয়েকজনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলায় চলে যান।

পেটের সমস্যা নিয়ে ভারতে চিকিৎসা করানোর জন্য ১২ জানুয়ারি আরশাদ পাসপোর্ট ও ভিসা নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে বালুরঘাটে পৌঁছান।

আরশাদের ফুপাতো ভাই সাহেব জানিয়েছেন, ১৪ জানুয়ারি তাঁরা আরশাদকে বিহারের কিসানগঞ্জ এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসার পরে ২০ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে তিনি ছুটি পান। কিন্তু সোমবার বিকেলে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন আরশাদ। হাসপাতালে নিয়ে ওয়ার পরে তাঁর মৃত্যু হয়।

সাহেব আলী ভারতীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়েও পাসপোর্ট না থাকায় তাঁর স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা এ দেশে আসতে পারছেন না। তাই তার মৃতদেহও বাংলাদেশে  নিয়ে যেতে পারছেন না। আমরা পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের দাদার মৃতদেহ বাংলাদেশের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেছি’।

উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি কবিতা বর্মণ কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, ‘সরকারি নিয়ম মেনে কী ভাবে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ বাংলাদেশে পাঠানো হবে পুলিশ ও প্রশাসন তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

এবি/রাতদিন