হত্যা মামলায় সাঈদীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন, আসামী ১০৭

অমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রলীগ কর্মী হত্যা মামলায় মানবতাবিরোধী অপরাধে এই চার্জ গঠন করা হয়।

বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই রাজশাহীর অতিরিক্ত মহানগর দায়রা ও জজ এনায়েত কবীর সরকারের আদালতে সাঈদীসহ মোট ১০৭ জন আসামির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ গঠন হয়।

এর আগে আদালতে অভিযোগের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এ দিন মামলার জামিনে থাকা ৬০ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শুনানির জন্য বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতের সামনে আনা হয়। সাঈদী হুইল চেয়ারে বসে ছিলেন। কয়েকজন পুলিশ সদস্য হুইল চেয়ার তুলে ধরে সাঈদীকে একটি ভবনের দোতলায় আদালতে নিয়ে যান।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাবিতে ছাত্রশিবির ক্যাডাররা ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এসময় ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন মারা যান। এ নিয়ে রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু নগরীর মতিহার থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন। মামলায় জামায়াতের শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মো. মুজাহিদ ও দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীসহ মোট ১১০ জনকে আসামি করা হয়।

এরপর ২০১২ সালের জুলাই মাসে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। মামলাটি তখন মহানগর দায়রা ও জজ আদালতে চলছিল। দেড় বছর আগে মামলাটি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা ও জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। এরপর অভিযোগপত্র দাখিলের ৯ বছর পর এ মামলার অভিযোগ গঠন হলো। ফলে এখন থেকে মামলার বিচার কার্যক্রমও শুরু হলো।

অভিযোগের শুনানির সময় ৫৯ জন আসামি কাঠগড়ায় ছিলেন। আর দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী ছিলেন কাঠগড়ার বাইরে, আদালতের ভেতরেই। তিনি হুইল চেয়ারেই বসে ছিলেন। বয়স বিবেচনায় তাকে কাঠগড়ার বাইরে রাখা হয়। পরে শুনানি ও অভিযোগ গঠন শেষে বেলা ১২টা ৫ মিনিটের দিকে তাকে আদালত থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সিরাজী শওকত সালেহীন এলেন জানান, অভিযোগের শুনানির সময় আসামিদের কাছে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তখন দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী বলেছেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

মামলার অভিযোগপত্রের বরাত দিয়ে আইনজীবী শওকত সালেহীন বলেন, ফারুক হত্যাকাণ্ডের দুই দিন আগে ৭ ফেব্রুয়ারি মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মো. মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী ও রাজশাহী জামায়াতের শীর্ষ নেতারা শহরে ছাত্রশিবিরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের খুনের নির্দেশনা দেন। এরপর ৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই প্রস্তুতি নেয় ছাত্রশিবির। ৯ ফেব্রুয়ারি তারা ছাত্রলীগ কর্মী ফারুককে হত্যা করে।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুন জানান, এই মামলার অভিযোগ গঠনের জন্য গত শনিবার গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকে তাদের কারাগারে আনা হয়। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে আবার কাশিমপুরে পাঠানো হবে।