হাতীবান্ধায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নানা নাটকীয়তা, অবশেষে স্বীকৃতি

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে অবশেষে প্রমানিত হয়েছেন নজিমা বেগম। প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরল হকের ২য় স্ত্রীর সন্তান হিসেবে প্রমানিত হওয়ার আগে অনেক নাটকীয়তা অতিক্রম করেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার, ২৭ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিনের উপস্থিতিতে ৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষ্যের প্রেক্ষিতে নাজিমা বেগম মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরল হকের এক মাত্র মেয়ে এটি প্রমানিত হয়।

এর আগে বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরল হকের প্রথম স্ত্রী ও ছেলেরা তার ২য় স্ত্রী ও সন্তানকে অস্বীকার করেন। এ অভিযোগ তুলেন ২য় স্ত্রীর কন্যা নাজিমা বেগম। তিনি এ ঘটনায় বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন।

প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা নুরল হকের বাড়ি হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী গ্রামে। 

জানা গেছে, মৃত মুক্তিযোদ্ধা নুরল হক ভূমি অফিসের একজন অবসর প্রাপ্ত কর্মচারী।  তার মৃত্যুর পর মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা, চাকুরীর পেনশনসহ জমি জমার ভাগ বন্টন করতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওয়ারিশন সনদ গ্রহন করেন মুক্তিযোদ্ধার পুত্র ও বাড়াইপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজিজুল ইসলাম। তিনি ওই ওয়ারিশন সনদ পত্রে তার বিমাতা বোন নজিমা বেগমকে নিজের বোন বলে দাবী করলেও সৎ মা মজিরন নেছাকে অস্বীকার করেন।

অভিযোগের আলোকে বৃহস্পতিবার হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিনের অফিসে তদন্ত হয়। ওই তদন্তে মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরল হকের ৭ জন সহযোদ্ধা সাক্ষ্য দেয় নজিমা বেগম নুরল হকের মেয়ে। নুরল হকের দুই স্ত্রী ছিলেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর এক মাত্র সন্তান হলেন নজিমা বেগম। ওই তদন্তের সময় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর জব্বার উপস্থিত ছিলেন।

তদন্তকালে আজিজুল ইসলাম বলেন, নজিমা বেগমের মা মজিরন নেছাকে আমার বাবা বিয়েই করে নাই। মানবিক কারণে তাকে বোন হিসেবে স্বীকার করেছি।

সিঙ্গিমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দুলু বলেন, আজিজুল ইসলাম নামে ওই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান তথ্য গোপন করে আমার কাছে ওয়ারিশন সনদ পত্র নিয়েছেন। পরে আমি সংশোধন করে আবারও ওয়ারিশন সনদ পত্র দিয়েছি। ওই মৃত মুক্তিযোদ্ধার ২ স্ত্রী, ৪ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে।

হাতীবান্ধার ইউএনও সামিউল আমিন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমার অফিসে আজ তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে। তদন্তকালে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা সাক্ষ্য দিয়েছেন নজিমা বেগম বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরল হকের মেয়ে। নুরল হকের দুই স্ত্রী ছিলেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর এক মাত্র সন্তান হলেন নজিমা বেগম। নজিমা বেগমের মা মজিরন নেছা ও নুরল হকের বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন সাক্ষীও সাক্ষ্য দিয়েছেন। সব মিলে নজিমা বেগম বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরল হকের সন্তান হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

জেএম/রাতদিন

মতামত দিন