হাতীবান্ধায় ২য় বিয়ে করে বাড়ী ফিরে ১ম স্ত্রীকে রাতভর নির্যাতন

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় দ্বিতীয় বিয়ে করে বৌ নিয়ে বাড়ীতে এসে প্রথম স্ত্রীকে বেধে রাতভর শারিরীক নির্যাতন করেছেন স্বামী। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথম স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রোববার, ১৩ মার্চ মধ্য রাতে উপজেলার বড়খাতা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত দুলু ‍মিয়া উপজেলার বড়খাতা এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে। আহত ওই গৃহবধূ রংপুর পীরগাছার ফকিরপাড়ার নুর মোহাম্মদের মেয়ে।

জানা গেছে, দুলু মিয়ার সাথে হাসিনা বানুর বিয়ে হয় প্রায় ১৪ বছর আগে। তাদের সংসার শাহিদা বেগম নামে চতুর্থ শ্রেণী পড়ুয়া এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হলে শাহিদা জানায়, যৌতুকের জন্য প্রায় মাকে মারধর করতেন তার বাবা।

ঘটনার দিন মধ্যরাতে সুমি নামের একটি মেয়েকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন দুলু মিয়া। কেন বিয়ে করেছেন জানতে চাইলে চাহিদামতো যৌতুক পাওয়ার কথা বলেন দুলু। পরে এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাক বিতন্ডা শুরু হয়। এর এক পর্যায়ে দুলু ক্ষিপ্ত হয়ে হাসিনাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে ঘরে আটকিয়ে রেখে রাতভর নির্যাতন চালান।

মায়ের অবস্থা খারাপ দেখে মেয়ে শাহিদা বেগম স্থানীয় প্রতিবেশীর সহযোগীতায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

আজ সোমবার, ১৪ মার্চ দুপুরে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, স্বামীর মারধরে আহত হাসিনা হাসপাতালের বেডে শুয়ে ব্যাথার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। তার মুখে, গলায় ও শরীরের নিম্নাংশে আঘাতের লালচে দাগ পড়ে গেছে।

এ সময় হাসিনা বানু বলেন, কেন বিয়ে করেছে জানতে চাইলে সারারাত আমাকে আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। শুধু তাই নয় হত্যার জন্য গলা টিপেও হত্যাচেষ্টা করে। সুস্থ হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানান তিনি।

অভিযুক্ত দুলু দ্বিতীয় বিয়ে ও স্ত্রী হাসিনা বানুকে মারধরের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি বিয়ে করে বাড়িতে যাই স্ত্রীর সাথে সমঝোতা করার জন্য। কিন্ত সে আমার কোন কথা না শুনে আমাকে মারতে এগিয়ে আসে। তাই আমি তাকে রাগের মাথায় মারধর করেছি। এটা কোন বিষয় না পরে সব ঠিক হয়ে যাবে।’

হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার ডা. জুয়েল রানা জানান, ওই গৃহবধূকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করানো হয়েছে। এখন তাকে প্রয়োজনীয় সব চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, গৃহবধূকে মারধরের ঘটনায় এখনো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।