হিন্দু প্রতিবেশীর মরদেহ সৎকার মুসলমানদের হাতে!

ভারতজুড়ে যখন সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে পড়ছে, তখন সম্প্রীতির নিদর্শন গড়েছেন দেশটির মুসলমানরা। সম্প্রীতির নিদর্শন হল প্রতিবেশীর সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখা, সে হিন্দু মুসলিম যে ধর্মেরই হোক না কেন। আর তারই নজির গড়লেন মুসলিমরা। এক হিন্দু প্রতিবেশীর মৃতদেহ সৎকার করতে এগিয়ে গেলেন মসজিদের ইমামসহ মুসলমানরা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার সুতির মোমিনপুর নামক গ্রামে মাত্র দু’ঘর হিন্দু ধর্মালম্বী বাস করে পাঁচশ মুসলিম পরিবারের মধ্যে। অথচ এখানে ধর্ম একটাই মানবধর্ম।

সোমবার, ৮ জুলাই সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ওই গ্রামের গণেশ রবিদাস (৪৫)। নুন আনতে পান্তা ফুরনো পরিবারে মৃতদেহ সৎকারের খরচ জোগানো মুশকিল ছিল। কিন্তু মুশকিল আসানে এগিয়ে আসেন খোদ মসজিদের ইমাম। গাঁয়ের ছেলেদের সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে যান গণেশের বাড়িতে। জাকির-নুরুলরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অন্তিম যাত্রায় সঙ্গী হন হিন্দু প্রতিবেশীর। কেউ বাঁশ কেটে আনেন, কেউ খই ছিটালেন, কেউ আবার ঘাটকাজের জন্য নতুন কাপড় কিনে আনেন এক দৌড়ে।

মৃত গণেশের স্ত্রী সনকা রবিদাস বলেন, ‘‌আমাদের বিপদের সময় যেভাবে মুসলিমরা পাশে দাঁড়িয়েছেন, তা সত্যিই খুব ভাল লাগছে। আমরা এখানে একসঙ্গে বসবাস করি। আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই।’‌

মসজিদের ইমাম মওলানা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‌মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নয়, সকলে সম্প্রীতির বন্ধনে থাকতে চাই। প্রতিবেশীর পাশে থাকা আমাদের নৈতিক কর্তব্য। হিন্দু, না মুসলিম ধর্ম দেখে নয়। মৃত গণেশ আমাদের প্রতিবেশী। তার মৃত্যুতে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত।’

মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার শ্রী মুকেশ বলেন, ‘মুর্শিদাবাদ জেলা বরাবরই সম্প্রীতির মেলবন্ধনের জায়গা। সুতির মোমিনপুরে যে ঘটনা ঘটেছে, তার উদাহরণ সব জায়গায় তুলে ধরা হবে। সহিষ্ণুতাই পরম ধর্ম।’

এবি/রাতদিন