৩৩ পরীক্ষার্থী বহিস্কারের ঘটনায় উত্তপ্ত পাটগ্রাম

চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দুটি কেন্দ্রে নকলের দায়ে ৩৩ শিক্ষার্থীকে বহিস্কারের ঘটনায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করেছে বহিস্কৃতরাসহ বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মীরা।

বুধবার, ১০ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে পাটগ্রাম সরকারি কলেজের সামনে অবরোধ সৃষ্টি করা হলে বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে ছেড়ে আসা পাণ্যবাহি ট্রাকসহ অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে। তবে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পাটগ্রামের ইউএনও আব্দুল করিমের আশ্বাসে স্থগিত করা হয় অবরোধ।

এর আগে বুধবার দুপুরে বহিস্কৃত পরীক্ষার্থীদের নিয়ে পাটগ্রাম সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের নেতারা পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে চৌরাঙ্গী মোড়ে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

ছবি : রাতদিন.নিউজ

এসময় বক্তব্য দিতে গিয়ে বহিস্কৃত ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই নকলের সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করেন।

তবে পাটগ্রাম সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আবতাবুর রহমান আবতাব বলেন, ‘আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ইতোমধ্যে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। আমরা জানতে চাই, পরীক্ষা কেন্দ্রে কিভাবে হাতে লেখা নকলের সীট এলো। সেইসাথে ছাত্রছাত্রীরা কেনইবা এমন ঘটনার শিকার হলো’।

জানা গেছে, চলতি বছর পাটগ্রাম উপজেলায় তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে পৃথক দুইটি কেন্দ্রে উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্র দুটি হচ্ছে সরকারি জসমুউদ্দিন কাজি আব্দুল গণি কলেজ ও পাটগ্রাম মহিলা কলেজ। শিক্ষা বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা মহিলা কলেজে আর মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে যথারীতি পরীক্ষা দিচ্ছেন।

এই অবস্থায় গত সোমবার ওই দুই কেন্দ্রে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রে পরীক্ষা চলাকালীন দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মানিক হোসেন ও সহকারি সচিব ইব্রাহিম আজাদ আকস্মিকভাবে পাটগ্রাম সরকারি জসমউদ্দিন কাজি আব্দুল গণি ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্র পরির্দশনে আসেন। এসময় তারা ওই কেন্দ্রের ১৫ পরীক্ষার্থীর ( যাদের সবাই পাটগ্রাম মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী) নিকট একই ধরণের নকলের সীট পেয়ে তাদের খাতা কেন্দ্র সচিবের নিকট জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। পরে তাদের বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে এই বহিস্কারের খবর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পৌঁছলে সেখানেও নকলের দায়ে পাটগ্রাম সরকারি ও আদর্শ কলেজের মোট ১৮ শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করেন কক্ষ পরিদর্শকগণ।

তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩৩ শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করার ঘটনা জানাজানি হলে উপজেলা জুড়ে তোলপাড় সৃস্টি হয়। বহিস্কারকৃত শিক্ষার্থী ও তাদের অবিভাবক এবং স্থানীয়দের অনেকে কলেজ অধ্যক্ষদের পুরণো দ্বন্দের কারণেই এ বহিস্কারের ঘটনা বলে দাবি করে আসছেন।

ওই ঘটনার পর থেকেই দুই কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিবকে অব্যাহতিসহ দোষিদের শাস্তি দাবি করে আসছেন বিক্ষুব্ধরা।

এবি/রাতদিন