বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ: সংগ্রামী চেতনার আরেক দৃষ্টান্ত

সংগ্রামী বাঙ্গালি চেতনার একটি অনন্য মাইলফলক পহেলা বৈশাখ। তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান সরকার বরাবর চেষ্টা করেছে বাঙালি সংস্কৃতি চিরতরে মুছে দিতে। বাঙালি সংস্কৃতির উপর কালো থাবা বিস্তারে পাকিস্তান সরকার পূর্বপাকিস্তানে রবীন্দ্রসংগীতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করে।

পাকিস্তান সরকারের এই অন্যায় আচরণের জবাব দিতেই ‘ছায়ানট’ ১৯৬৫ সালের ১৪ এপ্রিল (১লা বৈশাখ, বাংলা ১৩৭২ সন) রমনার বটমূলে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “এসো হে বৈশাখ এসো এসো” গানটি দিয়ে সর্বপ্রথম যাত্রা শুরু করে। এটি শুধু ছায়ানটের যাত্রা শুরু ছিলো না, এটি ছিলো প্রতিবাদ, রুখে দাড়ানোর আহ্বান। বস্তুত এই দিনটি থেকেই ‘পহেলা বৈশাখ’ বাঙালী সংস্কৃতির অন্যতম এক পরিচায়ক রূপ ধারণ করে। প্রতিরোধের আগুন ছড়িয়ে শুরু হয় পহেলা বৈশাখ উদযাপন।

১৯৭২ সালে (বাংলা ১৩৭৯ সন) ‘পহেলা বৈশাখ’ বাংলাদেশের জাতীয় পার্বন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবার আগ পর্যন্ত পাকিস্তান সরকার একুশে ফেব্রুয়ারীর মতোই থামিয়ে দিতে চেয়েছে বৈশাখের উদযাপন।‘হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি’ বলে এই সাম্পদায়িক শক্তি বারবার চেষ্টা করেছে বৈশাখী উদযাপন রুখে দিতে। চেষ্টা করেছে মহান একুশে পালন বন্ধ করতে।

সকল বাধা বিপত্তি পেরিয়ে পহেলা বৈশাখ আজ এক সার্বজনীন বাঙালি উৎসব। যার উদ্ভব সংগ্রাম করার সংকল্প থেকে।