বহুল আলোচিত ফেলানী হত্যা মামলার পুনঃবিচার এবং ক্ষতিপূরণের দাবিতে ভারত সুপ্রিম কোর্টে আনীত রিটের (রিট নম্বর- ডব্লিউপি (সিআরএল)- নং-০০০৪১/১৫) শুনানি শুরু হয়েছে অবশেষে ।
আজ শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে বিচারপতি ড. ডি ওয়াই চন্দ্রচাদ এবং বিচারপতি কে এম জোসেফ-এর যৌথ বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়।
শুনানিতে রিটের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন অ্যাডভোকেট বিজন ঘোষ ও অ্যাডভোকেট অপর্ণা ভাট। আর প্রতিপক্ষ ভারত ইউনিয়ন ও অন্যান্যদের পক্ষে অংশ নেন অ্যাভোকেট ডি মোহনা। কিছু সময় শুনানি চলার পর অধিকতর শুনানীর জন্য পরবর্তী দিন আগামী ১৮ মার্চ ধার্য করে আদেশ দিয়েছেন যৌথ বেঞ্চ। অ্যাডভোকেট বিজন ঘোষের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম আব্রাহাম লিংকন।
বিগত ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে ভারত থেকে দেশে ফেরার সময় ১৪ বছর বয়সী কিশোরী ফেলানীকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছিল বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ। তার লাশ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলেছিল ৫ ঘন্টা। ঘটনার ৩০ ঘন্টা পর বিএসএফ লাশ ফেরত দিলে নাগেশ্বরী উপজেলার কলোনীটারী গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছিল।
ওই দিন ভারতের ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অধিনস্ত চৌধুরীহাট বিওপির কোম্পানী কমান্ডারের এফআইআর-এর ভিত্তিতে ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করা হয় ( জিডি নং-৩৪৯)। পরে এরই ভিত্তিতে ওই দিন একটি ইউডি মামলা রেকর্ড করা হয় ( মামলা নম্বর-৫/১১)।
এদিকে এই নৃশংস ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সরকার ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর চাপের মুখে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট কুচবিহারে ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টের বিচার এবং পূণর্বিচারে ফেলানী হত্যায় অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে খালাস দেয়া হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ৪ আগস্ট ফেলানী হত্যা মামলার পুনঃবিচার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মাসুম সম্পাদক কিরিটি রায় এবং ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম যৌথভাবে রিট আবেদন দাখিল করেন। আবেদনের হলফনামায় কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম আব্রাহাম লিংকন স্বাক্ষর করেছিলেন।
কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম আব্রাহাম লিংকন বলেন, উভয় রিটের শুনানী একসাথে করা হচ্ছে। এরফলে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা ফেলানী হত্যার ইস্যুটির যৌক্তিক নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করছি।
এর আগে ২০১৩ সালের ২৭ আগস্ট ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম ও বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী বাদী হয়ে আর একটি রিট আবেদন ভারতের সুপ্রীম কোর্ট দাখিল করেছিলেন।