ক্লাবে ভাঙচুর করে পুলিশও ডাকেন পরীমনি! (ভিডিও)

বোট ক্লাবে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তোলার পর পরীমনির বিরুদ্ধে ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছে গুলশানের একটি ক্লাব। ধর্ষণচেষ্টার দুদিন আগে মধ্যরাতে পরীমনি অল কমিউনিটি ক্লাবে গিয়ে তাণ্ডব চালান বলে অভিযোগ উঠেছে। ক্লাবের প্রেসিডেন্ট কেএম আলমগীর ইকবাল এই অভিযোগ করে বলেন, ক্লাবে ভাঙচুরের পর পুলিশও ডাকেন পরীমনি ও তার সঙ্গীরা।

অল কমিউনিটি ক্লাবের সভাপতি আলমগীর ইকবাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একপর্যায়ে উনারা ৯৯৯ -এ ফোন করে পুলিশ কল করেন। তখন পুলিশ আসে, পুলিশ এসে দেখতে পান যে, উনি এগুলা ছুড়ে মারছেন। তখন পুলিশ উনাদের জিজ্ঞেস করেন আপনারা এখানে কেন আসছেন, কেন আমাদের কল করছেন? তখন তারা বলেন যে, আমাদের সঙ্গে এই হয়েছে, ওই হয়েছে। উনারা (পুলিশ সদস্যরা) বলেন যে, এরকম তো কিছু দেখছি না। তখন কেউ ছিলও না। দুইজন ওয়েটার ছিল আর এই তিন চারজন মানুষ।’

পরের ঘটনায় বর্ণনায় ক্লাব প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তারপরে পুলিশ সদস্যরা ওয়াকিটকির মাধ্যমে উপরে জানতে চায় যে তারা এখন কী করবে। ওয়াকিটকির আওয়াজ বাইরে যাচ্ছিল। তখন উপরের থেকে নির্দেশ আসে যে, উনারা যদি এমন করে তাহলে উনাদেরকে বের করে দিয়ে আপনারা চলে যান। তখন ওই আওয়াজ শুনে উনারা (পরীমনি) কিছুটা ঠান্ডা হন, আর পুলিশ ভাইদের কথা মতো সেখান থেকে চলে যান। তারপর পুলিশ ভাইয়েরাও চলে যান।’

ক্লাবের প্রেসিডেন্ট বলেন, পরীমনি সেই রাতে ১৫টি গ্লাস ভেঙেছেন, নয়টি স্ট্রে ছুড়ে মেরেছেন ও অনেক হাফপ্লেট ছুড়ে মেরে ভেঙেছেন। ঘটনার দিন পরীমনির সঙ্গে এক ভদ্রলোক ছিলেন, হাফপ্যান্ট পরা আরেক নারীও ছিলেন। এটা রাত প্রায় সোয়া ১টা বা দেড়টার ঘটনা।

আলমগীর ইকবালের অভিযোগ, ‘সাধারণত ক্লাবে অবান্তর কিছু হলে সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদককে ইনফর্ম করার কথা। কিন্তু পরীমনি যেহেতু এখানকার অতিথি তিনি সেটা জানেন না।’

এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ক্লাব সভাপতি বলেন, না, আমরা কোনো ডায়েরি করি নাই। কেন করি নাই; আমরা মনে করেছি যে, এতে আমাদের ক্লাবেরই সুনাম ক্ষুণ্ন হবে। এজন্য আমরা জিডি করিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর...

তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি উনি (পরীমনি) সেলিব্রেটি। যদিও ব্যক্তিগতভাবে আমি উনাকে চিনি না। যদি উনি সেলিব্রেটি হয়, উনার মান-সম্মান রক্ষা করার দায়িত্ব উনার নিজের। উনি উচ্চবংশের, উনি শিক্ষিতা, এটা উনার ডিউটি যে, উনার মান সম্মান কীভাবে রক্ষা করবেন। এটা আমার ডিউটি নয়। আমার ডিউটি আমার মান সম্মান কীভাবে ধরে রাখব। যেমন- নায়ক শাকিব খান আমাদের ক্লাবের মেম্বার। উনি তো কোনো অসংলগ্ন আচরণ করেছেন বলে আমার মনে পড়ে না। যার যার মান সম্মান তাকে বজায় রাখতে হবে। সেখানে আমাদের কিছু করার নেই।’

এ বিষয়ে পুলিশের গুলশান বিভাগে উপকমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী যুগন্তরকে বলেন, ৭ জুন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে ফোন পেয়ে পুলিশ অল কমিউিনিটি ক্লাবে গিয়েছিল। পুলিশ সেখানে যাওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে পুলিশ নিয়ম অনুযায়ী ঘটনার বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে।

তবে পরীমনি ক্লাব প্রেসিডেন্টের বক্তব্যকে ‘ফালতু অভিযোগ’ বলে অভিহিত করেছেন। এতদিন পর এসব অভিযোগ করা হচ্ছে কেন এমন অভিযোগও করেন পরীমনি।এটিকে মূল ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টাও বলেছেন পরী।

এর আগে ৮ জুন পরীমনি ঢাকা বোট ক্লাবে গেলে সেখানে তাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় সোমবার ৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন এ চিত্রনায়িকা। মামলার পর পুলিশ প্রধান দুই আসামিসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে।

সূত্র : যুগান্তর

এনএ/রাতদিন

মতামত দিন