কুড়িগ্রামে অন্তঃসত্ত্বা পিংকি খাতুন শিল্পীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ও মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা মামলায় স্বামীর ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মান্নান এ আদেশ দেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাসেল বাবু পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতে আদালত এ আদেশ দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এসএম আব্রাহাম লিংকন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নাগেশ্বরী উপজেলার নাখারগঞ্জ বাজার এলাকার সাইফুর রহমানের ছেলে রাসেল বাবু বিয়ের দেড় বছর পর যৌতুকের জন্য চাপ দেয় ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শিল্পীকে। নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথরডুবি গ্রামের বাবা হাতেম আলীর কাছে চলে যায় শিল্পী।
এদিকে শ্বশুরবাড়িতে এসে স্ত্রীকে সন্তান নষ্ট করার এবং তাকে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাপ দিতে থাকেন রাসেল। রাসেল বাবু শ্বশুরবাড়িতে এসে থাকা শুরু করেন। এ পরিস্থিতিতে একদিন শিল্পীর বাবা-মা বাড়িতে না থাকার সুযোগ নিয়ে স্বামী রাসেল বাবু তার স্ত্রী শিল্পীকে জোর করে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেন। এতে রাজি না হওয়ায় বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে রাসেল বাবু স্ত্রী শিল্পীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান।
২০১১ সালের ২৭ মে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে ওই দিনই শিল্পীর মা রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী থানায় মামলা করেন। প্রায় ১০ বছর মামলার শুনানি ও সাক্ষ্য প্রমাণে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি রাসেল বাবুকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন পিপি আব্রাহাম লিংকন এবং আসামিপক্ষে ছিলেন ফখরুল ইসলাম ও সিদ্দিকুর রহমান।