খালেদা জিয়া জেলে ‘রাজার হালে’ আছেন: প্রধানমন্ত্রী

বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদাকে ‘সন্ত্রাসের গডমাদার’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এরপরও বলব খালেদা জিয়া যে জেলে আছেন, সেখানে অনেক ভালো আছেন। রাজার হালে আছেন।

বুধবার, ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই সন্ত্রাসের গডমাদার হচ্ছেন খালেদা জিয়া। যিনি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে মানুষ খুন করেন, ঠাণ্ডা মাথায় মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করতে পারেন- তার চেয়ে বড় সন্ত্রাসী আর কে হতে পারে?

তিনি বলেন, আর যেন কোনো সুদখোর, ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, জঙ্গীবাদী, অগ্নিসন্ত্রাসী, মানুষ পুড়িয়ে হত্যাকারী ও এতিমের টাকা আত্মসাতকারী দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে না পারে, দেশকে ধ্বংসের দিকে নিতে না পারে- দেশবাসীর প্রতি সেই আহ্বানই থাকবে।

দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে যিনি কারাগারে গেছেন, তার এত মায়াকান্না কেন? খালেদা জিয়া মানুষকে অত্যাচার-নির্যাতন করেছেন, পুড়িয়ে হত্যা করেছেন- সেটা তো সত্য।

তিনি বলেন, এই দরদ যারা দেখান, তারা খালেদা জিয়া ও বিএনপি-জামায়াত জোটের হাতে অগ্নিদগ্ধ মানুষগুলোর কষ্টের চেহারা দেখে আসা উচিত! এরপরও বলবো খালেদা জিয়া যে জেলে আছেন, সেখানে অনেক ভালো আছেন। রাজার হালে আছেন।

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার এই অসুস্থতা তো পুরনো। ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় আসার পরই আমেরিকায় তার হাঁটু রিপ্লেস করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সৌদি আরবেও তার হাঁটুর অপারেশন হয়েছিল। আর বিদেশে যাওয়ার পরে খালেদা জিয়া যখন শপিং করেন, তখনও হুইল চেয়ারে শপিং করতেন। ফালু হুইল চেয়ার ঠেলতেন, আর তিনি গিয়ে শপিং করতেন। তিনি যখন হজ করেন, সেখানেও ফালু হুইল চেয়ার ঠেলতেন। তার হুইল চেয়ারে বসা, সেটা নতুন কিছু হয়। এটা তো বহু যুগ ধরেই দেখে আসছি।

তিনি বলেন, আর খালেদা জিয়ার এই জেলে থাকা আর অসুস্থতার কথা বলেই কিছু লোকের এত হাহাকার কেন? এত দরদ, এত মায়াকান্না কেন? এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেই তো তিনি জেলে গেছেন। আল্লাহ তায়ালাই তো বলে দিয়েছেন, এতিমের টাকা আত্মসাৎ করলে তিনিই তার ব্যবস্থা নেবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সূচনা বক্তব্যের পর তার সভাপতিত্বে জাতীয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দলের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পরিচালনায় সভায় শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।

রুদ্বদ্বার বৈঠকে দলের বার্ষিক আয়-ব্যয় ও আগামী বাজেট অনুমোদন ছাড়াও আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় দলের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এনএ/রাতদিন