দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দরের উত্তর পলাশবাড়ী আমিরন-সিরাজ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ নির্মাণ কাজ গত তিন বছরেও শেষ হয়নি। ফলে শ্রেণিকক্ষের অভাবে বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে ক্লাস করছেন। এতে প্রাচীনতম এ বিদ্যালয়টির পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। যদিও এবারে ২০২২ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে উত্তর পলাশবাড়ী এএসএম উচ্চ বিদ্যালয়টি উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তর পলাশবাড়ী এএসএম উচ্চ বিদ্যালয়টি বিগত ১৯৬৬ সালে স্থাপিত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে সাড়ে ৪ শ’ এরও বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। চিরিরবন্দর উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বিদ্যালয়টিতে শ্রেণিকক্ষের সংকট দীর্ঘদিনের। ফলে শ্রেণি কক্ষের অভাব দূরীকরণে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর বিদ্যালয়ের একতলা একাডেমিক ভবনের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের নির্মাণ কাজের উদ্যোগ নেয়।
প্রায় ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজের টেন্ডার করে দিনাজপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর। বিগত ২০১৮ সালে ২৮ অক্টোবর দিনাজপুর – ৪ (চিরিরবন্দর- খানসামা) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এরপর ২০১৯ সালে প্রথম দিকে বিদ্যালয়ের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ নির্মাণ কাজটি শুরু হয়। আর এ নির্মাণ কাজটি করছেন দিনাজপুরের কাঞ্চন কলোনীর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মো. সালাউদ্দিন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ কাজটিও শুরু করে যথারীতি।
এরপর অত্যন্ত ধীরগতিতে ওয়াশব্লকসহ তিন কক্ষের দ্বিতীয় ও তৃতীয়তলার নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে ইতোমধ্যে। কিন্তু কক্ষগুলোর বিদ্যুৎ ও পানির লাইনের কাজ, স্যানিটেশন, টাইলস্, দরজা-জালানা ও রং-এর কাজসহ টুকিটাকি অনেক কাজ এখনও শেষ হয়নি। যদিও টেন্ডার সিডিউলে নির্মাণ কাজ শুরুর নয় মাসের মধ্যে বিদ্যালয়ের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ শেষ করার সময়সীমা ছিল।
গতকাল রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকৃত মাত্র দুইজন টাইলস্ মিস্ত্রি ওয়াশব্লকে টাইলস্ বসানোর কাজ করছেন।
এ নিয়ে কথা হয় উত্তর পলাশবাড়ী এএসএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহীন পারভেজ আখতারের সঙ্গে। তিনি বলেন, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে একাডেমিক ভবনের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ার শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম নিয়ে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন।
এছাড়াও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় ধরে নির্মাণ কাজের মালামাল রেখে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে দখলে রেখেছেন। দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করতে দিনাজপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে চিঠি দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু তারা সেটি কর্ণপাত করছেন না। এমনকি এখন তারা (নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদার) কেউই প্রধানশিক্ষকের মুঠোফোন ধরছেন না।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে দিনাজপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদার মো.সালাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তারা মুঠোফোনের কল রিসিভ করেন নি।