লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার এক বিধবার একমাত্র অবলম্বন, গরু চুরি যাওয়ার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গরু চুরির সাথে এই দুজন জড়িত ছিলো বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সোমবার, ১৩ জুলাই রাত তিনটার দিকে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে পাটগ্রাম থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন জোংড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মমিনপুর কবরস্থান বাজার এলাকার মো. রশিদুল ইসলামের ছেলে মো. মাসুদ (২১) ও একই ইউনিয়নের মমিনপুর পাইকারটারী এলাকার মো. মজিবর রহমানের ছেলে মো. জুয়েল ইসলাম (২৬)।
জানাগেছে, আট বছর আগে স্বামী মজনু মিয়া মারা গেলে বিধবা হন ময়না বেগম। পাঁচ ছেলে- মেয়ে । এর মধ্যে এক ছেলে প্রতিবন্ধী । সংসার চালাতে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন ময়না। বহু কষ্টে মানুষের বাড়ীতে বুয়ার কাজ করে একটি বকনা গরু কিনে পালন করতে থাকে।
ওই গরু চার বার বাছুর (বাচ্চা) দেয়। দুধ বিক্রি করে টাকা জমিয়ে সন্তানের পড়া- লেখার খরচ ও টুকিটাকি সংসার চালান। আর দু’তিন দিনের মধ্যে গাভীটির বাছুর (বাচ্চা) হত। ওই গর্ভবতী গাভীটিসহ একটি বকনা চুরি হওয়ায় মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে ময়না বেগমের।
গত শনিবার (১১ জুলাই) গভীর রাতে ওই বিধবার এই গরু চুরি হয়ে যায়। রাত ২ টার দিকে গোয়াল ঘরে গরু দেখতে না পেয়ে চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বৃষ্টিতে ভিজে গরু খুঁজতে থাকেন তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও গরু না পেয়ে পরদিন থানায় একটি অভিযোগ দেন তিনি।
এর প্রেক্ষিতে রবিবার, ১২ জুলাই ভোর ৫ টার দিকে পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের মোমিনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। উদ্ধার হয় চুরি হয়ে যাওয়া বিধবার গরু দুটি।
লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানার নির্দেশে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) তাপস সরকার ও পাটগ্রাম থানার পরিদর্শক ( তদন্ত) মো. মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে পাটগ্রাম থানা পুলিশের একটি দল এ অভিযান চালান।
পাটগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোজাম্মেল হক জানান, ‘কর্তৃপক্ষীয় নির্দেশ ও মানবিক কারনে পুলিশ বিষয়টি অগ্রাধিকার বিবেচনায় অভিযান চালায়। চুরির সাথে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকাররোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
ঘটনার সাথে জড়িত অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।