আফ্রিকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দেশ মিসরের আশ-শারকিয়া প্রদেশের একটি হাসপাতালে মর্মান্তিক এক ঘটনা ঘটেছে। প্রদেশের করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে অক্সিজেন সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় চিকিৎসাধীন বেশ কয়েকজন রোগীর সবাই মারা গেছেন।
আশ-শারকিয়া প্রদেশের আল হুসেইনিয়া সেন্ট্রাল হাসপাতালে অক্সিজেন সঙ্কটে করোনা রোগীদের মৃত্যুর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। অক্সিজেন সঙ্কটে রোগীদের একের পর এক প্রাণহানির ভিডিওটি ধারণ করেছিলেন একজন রোগীর স্বজন।
হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে ছিলেন ৬৬ বছর বয়সী ফাতিমা আল সায়েদ মোহাম্মদ ইব্রাহীম। এই নারীর একজন স্বজন অক্সিজেন সঙ্কটে মাত্র কিছু সময়ের ব্যবধানে একের পর একজনের মৃত্যুর ভিডিও ধারণ করেন।
রোগীদের দেয়া অক্সিজেনের মাত্রা দুই শতাংশের নিচে নেমে আসার পর মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে। পর্যাপ্ত অক্সিজেন না থাকায় রোগীদের জীবন বাঁচানো যায়নি।
দেশটির জেফতা জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) কিছুদিন আগে অক্সিজেন সঙ্কটে বেশ কয়েকজন রোগীর প্রাণহানির পর দ্বিতীয় এই ঘটনা ঘটেছে। মিসরের ক্ষমতাসীন সরকারের চিকিৎসা খাতে গাফিলতি ও দুর্নীতির মর্মান্তিক চিত্র তুলে ধরেছে এই ঘটনা।
অক্সিজেন সঙ্কটের কারণে ওই হাসপাতালে রোগী মারা যায়নি বলে দাবি করেছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী হালা জায়েদ। তবে দেশটির রাজনৈতিক দল মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে হাসপাতালে অক্সিজেন সঙ্কটে রোগী মৃত্যুর গুজব ছড়ানোর অভিযোগ করেছেন তিনি।
আল হুসেইনিয়া সেন্ট্রাল হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুহাম্মদ সামি আল-নাজ্জার ওই আইসিইউয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করেছেন। হাসপাতালে অক্সিজেন সঙ্কটের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
ডা. আল-নাজ্জার বলেছেন, রোগীরা বার্ধক্যজনিত এবং অন্যান্য অসুস্থতায় মারা গেছেন। এদিকে, হাসপাতালের ওই ওয়ার্ডের সব রোগী নন, বরং মাত্র চারজন মারা গেছেন বলে দাবি করেছেন আশ-শারকিয়া প্রদেশের গভর্নর।
হাসপাতালটিতে রোগীদের মৃত্যুর এই দৃশ্য ধারণ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ভিডিও ধারণকারীকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ।
সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর।