রপ্তানি বাড়াতে ২০২০ সালের জন্য ‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য’-কে জাতীয়ভাবে ‘বর্ষ পণ্য’ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার, ১ জানুয়ারি সকালে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা ২০২০ উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রপ্তানিনীতি অনুযায়ী পণ্যভিত্তিক রপ্তানিকে উৎসাহিত করার জন্য প্রতিবছর একটি পণ্যকে ‘বর্ষ পণ্য (Product of the year)’ ঘোষণা করা হয়। রপ্তানি বাড়াতে ২০২০ সালের জন্য ‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য’কে জাতীয়ভাবে ‘বর্ষ পণ্য’ ঘোষণা করছি।
এ খাতের পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, অটোমোবাইল, অটো-পার্টস, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স, অ্যাকুমুলেটর ব্যাটারি, সোলার ফটোভলটিক মডিউল ও খেলনা ইত্যাদি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এ খাতের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় কর্ম-পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
সম্ভবনাময় চারটি সেক্টরের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় Export Competitiveness for Jobs প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সম্ভাবনাময় চারটি সেক্টর যথা: চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাদুকা শিল্প, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য এবং প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনখাতে আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে এসব খাতে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে আমি মনে করি।
দেশজ কাঁচামালনির্ভর রপ্তানি পণ্য যথা পাটভিত্তিক বহুমুখী পণ্য, খাদ্যসহ অ্যাগ্রো-প্রসেসড্ পণ্য, হিমায়িত চিংড়ি, হিমায়িত মাছ, আম, আলু, হস্তশিল্পজাত পণ্য ইত্যাদি খাতের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে এসব পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।
আইসিটিসহ অন্য সব সেবাখাতের রপ্তানিতে এগিয়ে আসতে উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
পণ্য রপ্তানিতে প্রতিবেশী দেশগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা।
কূটনীতিক ও বিদেশি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উইন-উইন পরিস্থিতির জন্য ব্যবসার সুবিধার্থে বিনিয়োগ ও সোর্সিংয়ের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নিন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব নীতি একইসঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি পণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজার ও আঞ্চলিক বাজারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১৭ কোটি ভোক্তার বাজার নিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে হওয়ায় প্রায় চার বিলিয়ন ভোক্তার সঙ্গে সংযুক্ত। বাংলাদেশ বিশ্বে এখন বিনিয়োগ এবং সোর্সিংয়ের জন্য সর্বাধিক অনুকূল গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মেলার প্রাঙ্গণের প্রধান গেটে ফিতা কেটে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী মেলার ভেতরে প্রবেশ করেন এবং বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নসহ বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ জাফর উদ্দিন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিমা ইয়াসমিনসহ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা।
মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।